ভয়ংকর ভুতের গল্প – Bhayankar Bhuter Golpo (সেরা ভূতের গল্প)

Bongconnection Original Published
7 Min Read

 ভয়ংকর ভুতের গল্প – Bhayankar Bhuter Golpo (সেরা ভূতের গল্প)

ভয়ংকর ভুতের গল্প - Bhayankar Bhuter Golpo (সেরা ভূতের গল্প)
Loading...

ভয়ংকর ভুতের গল্প

আমার রোমহর্ষক ভূতের গল্প গুলির অভূতপূর্ব সাফল্য দেখে আরো বেশি উৎসাহিত হয়ে এবার
একটা ভয়াল ভয়ঙ্কর  রাতের ঘুম কেড়ে নেওয়া মারকাটারি তামিল সিনেমার স্টাইলে
দুর্ধষ্য একটা ভূতের গল্প লেখা শুরু করেছি। আপন মনে লিখছিলাম, কোনোদিকে খেয়াল
ছিলনা, হঠাৎ খাতার উপর একটা রোগা লিক লিকে ছায়া পড়তেই বুঝলাম ভূতো এসেছে। আমি
লেখা থেকে চোখ না সরিয়েই ভূতোকে বললাম, ‘ কি খবর ভূতো ভাই, সব ঠিকঠাক তো?’ ভূতো
বেশ অবাক হয়েই বললো ‘ আরে তুমি টের পেলে কী করে গো!!’ আমি একটু হেসে বললাম ‘ টের
না পাওয়ার কী আছে ভাই, এমন হারকিউলিসের মত বডির ছায়া দেখেই বোঝা যায় যে এটা ভূতো
বাবু ছাড়া আর কেউ নয়।’ ভূতো এবার হে হে করে হেসে উঠে বলে ‘ তা যা বলেছো অভি দা,
এই ছায়া নিয়েই যা হুলস্থুল হলো কাল পাল পাড়াতে। ‘ আমি এবার খাতা থেকে মুখ তুলে
ভূতোর দিকে তাকিয়ে  ঘটনাটা কী সেটা শুনতে চাইলাম। জবাবে ভূতো যা বললো সেটা
অনেকটা এই রকম,


বিশ্বের সেরা ভূতের গল্প

Loading...
পাল পাড়ার পঞ্চানন পালের  রোজ বিকালে গঙ্গার ধারে হাওয়া খেতে যাওয়ার
অভ্যাস। তার স্ত্রী গত হয়েছেন মাস দুয়েক হলো। নিঃসন্তান পাল বাবুর 
সাংসারিক জীবন কিন্তু মোটেও সুখের ছিলনা। তার স্ত্রী কমলার ছিল মারাত্মক সন্দেহ
বাতিক। তার বদ্ধমূল ধারনা ছিল যে পালবাবুর নির্ঘাত কোনো অন্য মেয়ের সাথে অবৈধ
সম্পর্ক  আছে। উঠতে বসতে এই নিয়ে পাল বাবুর সাথে অশান্তি লেগেই থাকতো তার।
এমনকি মৃত্যুর আগের মূহুর্তে অবধি কমলার মুখের শেষ কথা ছিল ‘ ভেবো না আমি মরে
গেলে তুমি পাড় পাবে, আমি ছায়ার মত তোমায় নজরে রাখবো, একটু বেচাল দেখেছি কী দেব
ঘাঁড়টা মটকে।’
আরো পড়ুন,


স্ত্রীর মৃত্যুর পর একটু মন বিষন্ন হলেও রোজকার এই অশান্তি থেকে মুক্তি পেয়ে মনটা
তার বেশ ফুরফুরেই লাগছিল। কিন্তু স্ত্রীর ওই শেষ কথা গুলি মনের ভিতর একটা
অস্বস্তি তৈরী করছিল। তাছাড়াও এমন কিছু ঘটনা ঘটছিল যে সেগুলিকে মনের ভুল বলে
এড়িয়ে যেতেও পারছিলেন না তিনি। বাড়িতে ঘর মোছা বাসন মাজার জন্য একটি মেয়ে আসতো।
সেদিন পাল বাবু চেয়ার বসে খবর কাগজ পড়ছেন, মেয়েটি বালতিতে জল এনে ঘর মুছতে
লেগেছে, বেখেয়ালেই পাল বাবু একবার নিচু হয়ে ঘর মুছতে থাকা মেয়েটির দিকে তাকাতেই
ঘরের কোনায় দাঁড় করিয়ে রাখা ঝাটাটা হঠাৎ ঝপাত করে মাটিতে পড়ে গেল, অথচ কোথাও কোনো
হাওয়া বাতাস নেই। আরেক দিন পাশের বাড়ির হারাধন বাবুর স্ত্রী  এসেছিলেন এক
বাটি লাউ চিংড়ি  দিতে। বাটিটা নিয়ে সবে রান্না ঘরে ঢুকতেই হঠাৎ করে উপরের
হুকে ঝোলানো একটা খুন্তি ঠকাস করে এসে পড়লো পাল বাবুর টাক মাথায়। যন্ত্রণায় হাত
থেকে ছিটকে পড়লো লাউ চিংড়ির বাটি। সেই থেকেই পাল বাবু মহিলাদের থেকে একটু দূরে
দূরেই থাকেন।

Bhayankar Bhuter Golpo

রোজকার মত আজও তিনি বিকেল বেলা গঙ্গার পাড়ে এসেছেন। দুপুর থেকেই আকাশটা একটু
মেঘলা ছিল, কিন্তু এমন হুট করে যে মুষলধারায় বৃষ্টি নেমে যাবে তা তিনি বুঝতেও
পারেননি। সঙ্গে ছাতাও নেই, তাই বৃষ্টি থেকে বাঁচতে তাড়াতাড়ি একটি গাছের তলায় গিয়ে
দাঁড়ালেন তিনি। এক নাগারে ঘন্টা খানিক বৃষ্টি হয়ে অবশেষে বৃষ্টিটা একটু থামতেই
যেই তিনি বাড়ির দিকে রওনা হতে যাবেন, তখনি দেখলেন কখন যেন তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে
এক অপরূপা সন্দরী তরুণী। বৃষ্টিতে ভিজে তার শরীরের ভৌগলিক মানচিত্র স্পষ্ট ফুটে
উঠেছে। মেয়েটি পাল বাবুর আরো কাছে সরে এসে মোহময়ী কন্ঠে বললো ‘ভাগ্যিস আপনি ছিলেন
নইলে এই ঝড় জলের রাতে আমার যে কী হতো’ মেয়েটির ভেজা ভেজা যৌবন পাল বাবুর মনকেও
সবে ভেজাতে যাচ্ছিল, তখনই হঠাৎ আগের সেই ঘটনা গুলি মনে পড়তেই নিজেকে সংযত করলেন
পালবাবু। কাঁপা কাঁপা গলায় বললেন ‘ ক – ক – কে তুমি? এই নির্জন জায়গায় একা একা কী
করছো? ‘ মেয়েটি এবার পাল বাবুর আরো কাছে এগিয়ে এসে একটা বাঁকা হাসি দিয়ে বলে ‘
শিকার খুঁজছিলাম রে বুড়ো, নে এবার ঝটপট মালকড়ি যা আছে পকেটে বেড় কর সব, নইলে
এখুনি চিৎকার করে লোক ডেকে বলবো তুই আমার ইজ্জত লুঠ করতে চাইছিলি। এতক্ষণে মেঘ
কেটে আকাশে গোল চাঁদ উঠেছে। 

Bhuter Golpo Story

পালবাবু বেশ বুঝতে পারলেন এখন এই মেয়ের কথা না শুনলে তার মান মর্যাদা সব ধুলায়
মিশে যাবে। তিনি কাঁপা কাঁপা হাতে পকেট থেকে মানিব্যাগটা বাড় করে মেয়েটির হাতে
দিতে গিয়ে দেখেন মেয়েটি বিস্ফারিত চোখে তাকিয়ে আছে মাটির দিকে। তার চোখ লখ্য করে
মাটির দিকে তাকাতেই পাল বাবুর সারা শরীর ভয়ে ঠান্ডা হয়ে গেল। তিনি দেখেন চাঁদের
আলোয় মাটিতে পড়া তার ছায়াটা আস্তে আস্তে বদলে যাচ্ছে এক নারী শরীরে। দু হাত
বাড়িয়ে সেই ছায়া চেপে ধরেছে ওই মেয়েটির গলা। ‘ পাল বাবু শুনতে পেলেন তার মৃতা
স্ত্রীর বাজখাই গলা, ‘ হারামজাদী নষ্টা মেয়ে ছেলে, আমার ভালো মানুষ গোবেচারা
নিরীহ  বরটাকে একা পেয়ে ওর সর্বনাশ করতে চাইছিলি। কী ভেবেছিলি ও একা আছে,
আমি সর্বক্ষণ ওর সাথে থাকি ওর ছায়া হয়ে। ‘ পাল বাবুর আর কিছু মনে নেই। জ্ঞান
ফিরতে দেখেন তিনি নিজের ঘরেই শুয়ে আছেন, পাড়ার তিন চারজন ছেলে দাঁড়িয়ে আছে সামনে।
এরাই পাল বাবুকে গঙ্গার ধারে অজ্ঞান অবস্হায় দেখে বাড়িতে নিয়ে আসে। ডাক্তার বাবু
বিপি চেক করে বললেন ‘ভয়ের কিছু নেই হঠাৎ কোনো কারনে প্রেসারটা বেড়ে গিয়ে সেন্সলেস
হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি একটা ঘুমের ওষুধ লিখে দিলেন। একে একে সবাই ঘর থেকে বেড়িয়ে
গেলেন। ঘরে একটা হাল্কা কম পাওয়ারের বাল্ব জ্বলছে। সেই আলোয় পাল বাবুর ছায়া পড়েছে
দেয়ালে। কিন্তু পাল বাবু ভালোই জানেন সে ছায়া আসলে কার। তবে আজ আর ওনার তেমন ভয়
করছে না। তিনি বুঝেছেন তার গিন্নীর একটু সন্দেহ বাতিক ছিলো ঠিকই, কিন্তু  সে
তাকে ভালোও কম ভাসতো না।

ভূতোর গল্প শুনতে শুনতেই খেয়াল করলাম দেয়ালে আমার ছায়াটাও যেন আস্তে আস্তে 
বদলে যাচ্ছে। তারপরই খেয়াল হলো, ধুর ছাই আমি তো ব্যাচেলর মানুষ।

আরো পড়ুন,

Share This Article