শেষ ভালোবাসা – Real Valobashar Golpo – খুব কষ্টের ভালোবাসার গল্প

Bongconnection Original Published
5 Min Read


 শেষ ভালোবাসা – Real Valobashar Golpo – খুব কষ্টের ভালোবাসার গল্প

শেষ ভালোবাসা - Real Valobashar Golpo - খুব কষ্টের ভালোবাসার গল্প
Loading...


শেষ ভালোবাসা 

গল্প যেখানে শুরু হয়, 
          রূপকথা যেখানে হার মানে।
ক্যানসারের কাছে হার প্রেমিকার, শেষ ইচ্ছায় হাসপাতালেই সিঁদুর দান ❤️❤️❤️❤️
“এ কোন গল্প নয়, উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ির এক যুবক যুবতীর অমর প্রেমের উপাখ্যান।”
….
 শ্বাস নিতে বড্ড কষ্ট হচ্ছিল মধ্য কুড়ির মেয়েটার ৷ ঠিক মতো কথাও বলতে
পারছিলেন না ৷ অস্ফুট স্বরে কেবল বলেছিলেন শেষ ইচ্ছেটা ৷ বলেছিলেন, মনের
মানুষটা যেন একটি বার তাঁর সিঁথিটা রাঙিয়ে দেন ৷ আর মনের মানুষের সেই কথা রাখতে
কসুর করেননি সুব্রত ৷ দশ বছর ধরে তো এই দিনটার অপেক্ষাতেই ছিলেন তিনি ৷ মেয়ের
কথা মতো, হাসপাতালের ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটেই হয়েছিল ব্যবস্থা ৷ সেখানেই মনের
মানুষকে সিদুঁর পরিয়ে আপন করে নিয়েছিলেন ৷ কিন্তু, আটকে রাখতে পারলেন না
৷ 
আরো পড়ুন, Bangla Golpo – শেষ দেখা
মাত্র দু’ঘণ্টার মধ্যে সব বন্ধন ছেদ করে চলে গেলেন বীথি ৷ গল্প-উপন্যাস,
সেলুলয়েডের পর্দাকে হার মানানো এ বৃত্তান্ত । ছোটোবেলার পরিচয় খুব সহজেই গাঢ়
হয়েছিল ৷ ছোটো থেকেই স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন ৷ সদ্য যৌবনে পা রাখা দুটো মন
নিজেদের মতো করে জীবন গড়ার স্বপ্ন দেখছিলেন ৷ কিন্তু, হঠাৎ একটা খবর দমকা
হাওয়ার মতো সব কিছুকে এলোমেলো করে দিল ৷ জানা গেল, মনের মানুষটা জটিল কর্কট
রোগে আক্রান্ত ৷ ছোটো মেয়ের এমন অসুখের কথা শুনে প্রথমে নিজের কানকেও বিশ্বাস
করতে পারেননি কালিপদ দাস 
৷ ভারতীয় রেলের কর্মী কালিপদবাবুর তিন মেয়ে, এক ছেলে ৷ শিলিগুড়ির ডাবগ্রামের
দাস বাড়ির ছোটো মেয়েটাকে দেখে ভালো লেগেছিল উত্তর দিনাজপুরের সুব্রত কুণ্ডুর ৷
সেই ভালোলাগা ভালোবাসায় পরিণত হতে খুব একটা সময় নেয়নি ৷ যখন যৌবনের দুটি হাত এক
সঙ্গে অনেকটা পথ পাড়ি দেওয়ার স্বপ্ন দেখছিল, তখনই সামনে আসে বীথির অসুখের কথা
৷ শুরু হয় চিকিৎসা ৷ শুরু হয়েছিল কেমো থেরাপি ৷ যার জেরে মাথায় চুল প্রায় সবটাই
উঠে যেতে থাকে। ..

ভালোবাসার গল্প কাহিনী

Loading...


৷ আস্তে আস্তে বুড়িয়ে যেতে থাকেন বীথি ৷ হারিয়ে যেতে থাকে যৌবনের সেই লাবণ্য ৷
তখন 2017 সাল৷ একটি হাতও কেটে বাদ দিতে হয় ৷ ফুটফুটে মেয়েটা নিজেকে গুটিয়ে নিতে
থাকে সকলের কাছ থেকে ৷ কিন্তু, সে দিনও একটি বারের জন্য মনের মানুষটার কাছ থেকে
নিজেকে সরিয়ে রাখেননি পেশায় বেসরকারি সংস্থার কর্মী সুব্রত ৷ পাশে থেকেছেন,
সাহস দেওয়ার চেষ্টা করেছেন ৷ হাতে হাত ধরে বলেছিলেন লড়াই করার কথা৷ চিকিৎসার
প্রয়োজনে কখনও মুম্বই, কখনই শিলিগুড়ি যেতে হয়েছিল বীথিকে ৷ 
কখনই বীথিকে সঙ্গ ছাড়া করেননি সুব্রত ৷ প্রথমে না জানলেও ততদিনে সুব্রতর পরিচয়
জানা হয়ে গেছে দাস পরিবারের সকলে ৷ এক দিন মেয়ের মোবাইলে চোখ পড়তেই সব স্পষ্ট
হয়েছিল কালিপদ দাসের ৷ বোন ক্যানসারে আক্রান্ত মেয়ের ভবিষ্যৎ জানলেও সাহস পাননি
বাধা দেওয়ার ৷কিন্তু, বাস্তব আর স্বপ্নের মধ্যে তফাতটা আকাশ-পাতাল ৷ মন শক্তি
জোগানোর কথা বললেও, বীথির শরীর কিন্তু ধীরে ধীরে শেষ হয়ে আসছিল ৷ হাসপাতালে
ভরতি করানো হয় তাঁকে ৷ গত শনিবার ঠিক মতো কথাও বলতে পারছিলেন না ৷ বারবার বুজে
আসছিল চোখ দুটো। ….

আবেগি ভালোবাসার গল্প

 চিকিৎসকরাও আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন ৷ তখনই মুখফুটে শেষ ইচ্ছায় কথাটা
বলেছিলেন বীথি ৷ মেয়ের সেই ইচ্ছাকেই মর্যাদা দেন তাঁর বাবা-মা ৷ আয়োজন করা হয়
বিয়ের ৷ বীথির নাকে তখন অক্সিজেন মাস্ক ৷subrata-bithi সিঁদুরদানের পর
হাসপাতালের বেডে সুব্রতর সঙ্গে বীথি ।স্বপ্ন পূরণের কিছু মুহূর্ত পড়েই বিছানায়
ঢলে পড়েন বীথি ৷ তখনও একটা হাত সুব্রতর হাতে ধরা ৷ শরীরটা আস্তে আস্তে নিস্তেজ
হয় পড়তে থাকে৷ চিকিৎসকরা শেষ চেষ্টা শুরু করার আগেই সব শেষ ৷ চোখের সামনেই
বীথিকে শেষ বিদায় দিলেন সুব্রত৷ মেয়েকে হারালেও যেন একটা ছেলে পেলেন বীথির
বাবা-মা ৷ 
তাঁরা বলেছেন, মেয়ের কঠিন সময় যে ভাবে সুব্রত পাশে ছিল, তা কথায় প্রকাশ করতে
পারব না৷ মেয়েকে হারিয়েছি ৷ কিন্তু, এমন একটা ছেলেকে পাব ভাবতেও পারিনি ৷ আর
সুব্রত! তখনও চোখের কোণায় চিক চিক করছে বিন্দুগুলো ৷ শত চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা
হল না ৷ কথা জড়িয়ে আসছে ৷ একটু যেন একলা থাকতে চাইছেন ৷ চার পাশের পরিবেশটা
তখন সুব্রতর কাছে বড্ড অচেনা ৷ তখনও ভাবেননি কী করবেন ৷ বাকি জীবনটা কি একলাই
কাটাবেন তিনি ! স্মৃতিটুকু সম্বল করে…🤍🖤
বর্তমান সময়ে ভালোবাসা যেখানে ঠুনকো, সম্পর্কের মানে এই প্রজন্মের কাছে যেখানে
মূল্যহীন সেখানে এই ঘটনা আরেকবার প্রমান করে দিলো সত্যি ভালোবাসাগুলো আজ ও
আপনার – আমার, আমাদের মাঝে বেঁচে আছে। 
ভালো থাকুক, বেঁচে থাকুক এমন সুব্রত – বিথীদের ভালোবাসা গুলো
আজীবন।  
Also read, 

Share This Article