বাসর রাতের রোমান্টিক গল্প – Bashor Rater Golpo – Bengali Story

Bongconnection Original Published
19 Min Read


 বাসর রাতের রোমান্টিক গল্প – Bashor Rater Golpo – Bengali Story

বাসর রাতের রোমান্টিক গল্প - Bashor Rater Golpo - Bengali Story
Loading...

______ বাসর রাতের গল্প_____

Loading...
,


বাসর ঘরে ঢুকেই বউকে বললাম,
— আমি কি একটা সিগারেট খেতে পারি?
কথাটা শুনেই মেয়েটা ইয়া বড় লম্বা ঘোমটা টা সরিয়ে সোজা আমার চোখের দিকে তাকিয়ে
থাকলো।আমি আমতা আমতা করে বললাম,
— ইয়ে মানে, আপনার যদি সমস্যা হয় তাহলে বাইরে গিয়ে খেয়ে আসি? 
— নাহ বাইরে যেতে হবে না, এখান থেকেই খান। আর আমাকেও দিয়েন একটা।
আমি আবাক হয়ে বললাম,
— আপনিও কি সিগারেট খাবেন?
— হ্যাঁ খাবো, আপনার কোন সমস্যা..?
— আর ইউ সিরিয়াস?
— ওফ ক্রস সিরিয়াস।আপনি যখন খেতে পারেন তবে আমি কেন পারবো না? 
 — আপনি তো ছেলে নন। 
— কোথায় লেখা আছে যে মেয়েদের সিগারেট খাওয়ার অধিকার নেই। আর ছেলে মেয়ের তো
সমান অধিকার তাই না? 
,

আমি এবার চুপ হয়ে গেলাম। কি করব ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম না। মেয়েটা সর্বদা তার
দৃষ্টি আমার উপর রেখেছে। আমি কি করছি তা দেখছে। একটু পর বলে উঠলো,

— সিগারেট খেলে কি হয় জানেন?
— হুঁ জানি।
— জানেন তাও খান কেন?
— ভালো লাগে।
— শুধু ভালো লাগার জন্যই খান?
— নাহ।
— তবে?
— নিকোটিনের ধোঁয়ায় কষ্ট গুলো উড়িয়ে দেওয়া যায়।
— এভাবে একেবারে কষ্ট চলে যায়?
— নাহ তা যায় না তবে যখনই এটা খাই কিছুটা ভুলে থাকতে পারি। 
— কষ্ট কি শুধু আপনি একাই পান?
— জানি না। তবে আমার কষ্টটা সীমাহীন।
— আমরা মেয়েরা কষ্ট পেলে কি করি জানেন? 
— হ্যাঁ জানি তো। কি আর করেন, ওইতো দরজা লাগিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বালিশ ভেজান। আর
আমরা ছেলেরা তো চাইলে আপনাদের মত কান্না করতে পারি না। সব লুকিয়ে রাখতে হয়।
— আপনারা শুধু এটা দেখেন যে আমরা শুধু কান্না করতে জানি? 
সিগারেট খেলে যদি সব কষ্ট দূর হয়ে যেত তবে আমরা মেয়ে জাতিও সিগারেট
খেতাম। 
— আমার মত কষ্ট পেয়েছেন কখনো?
— কিসের কষ্ট আপনার?
— একজন ছেড়ে চলে গেছে। কথা দিয়েও কথা রাখে নি। 
 — হাহাহাহা,।
— হাসছেন কেন?
— আপনার কথা শুনে । 
— আমি কি কোন হাসির কথা বলেছি??
— কেউ ছেড়ে চলে গেছে, যেতেই পারে। হ্যাঁ এর জন্য কষ্ট হতেও পারে তাই বলে
সিগারেট খেতে হবে? 


— দেখুন আমার ব্যাপারে আপনি এখন পর্যন্ত কিছুই জানেন না। 
— আপনি না বললে কিভাবে জানবো?
— সেটা আপনার না জানলেও চলবে। 
এই বলে রাগে দুঃখে দাঁত কড়মড় করে রুম থেকে বেড়িয়ে ছাদে চলে আসলাম।
,
একটা সিগারেট জ্বালিয়ে টানতে থাকলাম। হঠাৎ আমার কাঁধে কারো হাতের স্পর্শ অনুভব
করতেই পিছনে ফিরে তাকালাম।
— একি আপনি? এখানে এসেছেন কেন?
— কেন আসতে পারি না? 
 আমি আর কিছুই বলছি না। চুপ চাপ সিগারেট টেনেই যাচ্ছি। একটু পর বললাম,
— আপনি ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন যান।
— আমি একা একা কিভাবে ঘুমাবো.?
— জানি না।
— আপনি না গেলে আমিও যাবো না।
— পাগলামি করবেন না। আজ আর আমার ঘুম আসবে না। 
— কেন?
— ওকে খুব মনে পড়ছে।
— একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?
— কি?
— রাগ করবেন না তো?
— আমাকে দেখে কি খুব বেশি রাগী মনে হয়?
— নাহ। আসলে আপনার লাইফে অন্য কেউ ছিলো তাই না?
— হুঁ।
— আপনার গল্পটা,আমাকে শোনাবেন?
— (নিশ্চুপ)
— কি হলো চুপ করে আছেন কেন?
— ভালো লাগছে,না।
— শুনুন, হৃদয়ে জমানো চাপা কষ্ট কাউকে শেয়ার করলে মন হালকা হয়। 
— হয়তো।
— তাহলে শেয়ার করুন আমার সাথে।
— অন্য একদিন।
— নাহ আজ ই।
— জোর করে বলাবেন এখন?
— আচ্ছা আমি কি খুব বেশি খারাপ?
— নাহ।
— হয়তো আমাকে আপনার পছন্দ হয় নি।
— (নিশ্চুপ)

— যদি আমার সাথে না থাকতে চান তবে বলে দিয়েন ডিভোর্স দিয়ে দিবো। 

— তাহলে তো আপনার সুবিধা হয় তাই না?
— সুবিধা হয় মানে? কি বলতে চান?
— বয় ফ্রেন্ডের সাথে বিয়ে করতে সুবিধা হবে। আরে জানি তো। 
— কিইইইইইই? দেখুন আপনকে আমি আগেও বলেছি আমার কোন বি এফ নেই। 
আমি আর কিছুই বললাম না। চুপ করে রইলাম। মেয়েটা ঠিক কি করবে বুঝে উঠতে পারছে না।
আমাকে বিলিভ করানোর জন্য আমার হাত ধরে বললো
— ট্রাষ্ট মি, আমার কোন বি এফ নেই। আমি সব সময় চেয়েছি যে যার সাথে বিয়ে হবে
সেই হবে আমার বি এফ। আর তার সাথেই প্রেম কররো। আমি দেখেছি আমার বান্ধবিদের ওরা
একটার পর একটা রিলেশন করে ছ্যাকা খেয়ে ফেসবুকে স্টাটাস দেয় । কত নেকামি করে।
আমার এসব একদম ভালো লাগে না।
— বুঝলাম।
— এবার বিশ্বাস হয়েছে?
— হ্যাঁ একটু একটু।
— কি?
— না কিছু না। আপনি ফ্রেশ হয়ে আসুন।
— হ্যাঁ তবে একটু ওয়েট করুন আমি ফ্রেশ হয়ে কফি বানিয়ে আনছি। কফি খেতে খেতে
আপনার গল্প শোনা যাবে।
,
এই বলে এক দৌড়ে মেয়েটা ছাদ থেকে চলে গেলো। 
 মেয়েটার পাগলামি দেখে নিজের অজান্তেই মুখের কোনে হাসি চলে আসলো। কেমন
বাচ্চাদের মত স্বভাব। পারিবারিক ভাবেই আমাদের বিয়ে হয়েছে। প্রথমে রাজি হয় নি
কিন্তু মা বাবার পরিশ্রান্ত হাসিটা ধরে থাকতে এক প্রকার চাপে পরেই বিয়েটা করা।
ওর নাম অজান্তা। চেহারা একেবারে পরীর মত। যে কেউ দেখলে প্রেমে পড়ে যাবে। প্রথমে
দেখে আমিও একটু থমকে গিয়েছিলাম। তাই মা বাবাকে বলেছিলাম “এত সুন্দর চেহারার
মেয়ে কোথাও না কোথাও নির্ঘাত
  রিলেশন আছে। বিয়ের পরই ভেগে যাবে।”
কিন্তু সবাই বললো আসলেই মেয়টার কোন রিলেশন নেই। আমিও কিছুতেই বিশ্বাস করলাম না।
তাই বিয়ের আগে মেয়েটাকে লজ্জা লজ্জা মুখ করে জিজ্ঞেস করেছিলাম

বাসর রাতের রোমান্টিক গল্প pdf

,
— আচ্ছা একটা কথা বলবো..?
— জি।
— আপনার কয়টা বয় ফ্রেন্ড?
মেয়েটা রাগী লুক নিয়ে দাঁত কড়মড় করে বলেছিলো,
— আপনার কি মনে হয় আমি দশ বারোটা বয় ফ্রেন্ড নিয়ে ঘুরি?
— আপনি এত সুন্দর দেখতে বয় ফ্রেন্ড তো থাকার কথা।
— তো কি? আমি জানি আমি সুন্দর দেখতে। অনেক ছেলেই আমার পিছনে ঘুরে কিন্তু আমি
কাউকে পাত্তা দেই না।


— কেন?
– বলবো কোন একদিন।
এই বলে মেয়েটা আমার কাছ থেকে পালিয়ে গিয়েছিলো। এর সাথে বিয়ে হলে নিশ্চই পরের
দিন কারো হাত ধরে চলে যাবে। অবশ্য আমিও সেটাই চাই। কিন্তু মেয়েটার হাব ভাবে
তেমন মনে হচ্ছে না।
ওই তো মেয়েটা ফ্রেশ হয়ে কফি হাতে চলে এসেছে….
কিন্তু হাতে দেখছি এক কাপ ই কফি। মেয়েটা কি জানে না যে আমিও কফি খেতে পছন্দ
করি। কি স্বার্থপর, শুধু নিজের জন্যই বানিয়ে এনেছে। 
— আপনি কি একাই কফি খাবেন?
— নাহ আপনিও তো খাবেন।
— তাহলে এক কাপ কেন?
— হিহিহিহি
— হাসছেন কেন?
— আপনি কিছুই বুঝেন না।
— কি বুঝবো?
— এক কাপ কফি এনেছি কারন… 
— কি?
— বলবো?
— হ্যা বলেন।
— কারন….
— উফফ 
— কারন দুজনে,এক কাপেই খাবো।
এই বলে মেয়েটা খিল খিল করে হাসছে।
আমিও খানিকটা মুচকি হেসে আর একটা সিগারেট ধরাতে যাবো তখন অজান্তা আমার হাত ধরলে
বললো….

____বাসর রাতের রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প___

,
আমি খানিকটা মুচকি হেসে আর একটা সিগারেট ধরাতে যাবো তখন অজান্তা আমার হাত ধরে
বললো,
,

— প্লিজ আজ আর খাবেন না। অন্তত আমার জন্য। প্লিজ,প্লিজ। সিগারেটের গন্ধ আমার
একদম সহ্য হয় না। 

ওর মুখের দিকে তাকিয়ে কেন যেন থমকে গেলাম। সিগারেট ধরাতে গিয়েও ধরালাম
না। 
যতই দেখছি ততই অবাক হচ্ছি। এ দিকে না খেয়েও থাকতে পারছি না। কি করব তা বুঝে
ফেলার আগেই মেয়েটা বললো,
— আচ্ছা আপনার যদি সমস্যা হয় তবে আপনি খান, আমি না হয় কিছুক্ষনের জন্য দম
বন্ধ করে রাখবো।
— হোয়াট? দম বন্ধ করে আবার থাকা যায় নাকি?
— কি আর করবো, আপনি তো…… 
— আচ্ছা ঠিক আছে খাবো না। 
— কিই সত্যিইইই?
— হুঁ।
— ওয়াও আপনি এত্তগুলা ভালো।

এই বলে মেয়েটার মুখে কি হাসি! মনে হচ্ছে খুব খুশি হয়েছে। এর আগে এতটা খুশি
হতে কাউকে দেখি নি। 

— তাহলে এবার গল্প শুরু করুন। 
— হ্যাঁ করবো। 
— দাঁড়ান দাঁড়ান আগে কফিতে এক চুমুক দিয়ে নিন না হলে ফিলিংস পাবেন না।
আমি কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে বললাম,
— প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে কিছু অধ্যায় থাকে। কিছু অধ্যায় রঙিন আবার কিছু
অধ্যায় সাদাকালো। আর সাথে থাকে কিছু পরিত্যাক্ত ভালোবাসার গল্প যা শুরু হওয়ার
আগেই শেষ হয়ে যায়। যে গল্পের নায়ক আমার হবার কথা ছিলো, পরে বুঝতে পারলাম আমি
নায়ক না আমি আসলে ভিলেন। না ভিলেন বললেও ভুল হবে। আমি আসলে ওই গল্পের নীরব
দর্শক ছাড়া আর কিছুই ছিলাম না। 
 — ভেরি ইন্টারেস্টিং তো! একটু খুলে বলুন না প্লিজ।
আমি এবার দীর্ঘশ্বাস ফেলতে ফেলতে বললাম, 
— ক্লাস নাইনে থাকতে একটা মেয়েকে ভালো লেগে যায়। মেয়েটার নাম ছিলো তিশা।
দেখতে খুব একটা সুন্দরি না হলেও দেখতে বেশ মায়াবি। মাথায় দুইটা বেনি
বেঁধে,পরিপাটি হয়ে স্কুলে আসতো। ওকে ভালো লাগার বিশেষ কারনটা ছিলো ওর চুপচাপ
স্বভাব। ও অন্য আর ৫ টা মেয়েদের মত না। ক্লাসে স্যারের দিকে ছাড়া আর অন্য
কোথাও মনোযোগ দিত না৷ সব পড়া সবার আগে দিত। পরিক্ষাগুলোতেও বেশ ভালো রেজাল্ট
। এক কথায় মেধাবী মেয়ে। ক্লাস শুরু হলে মাথা নিচু করে ঢুকতো আবার ক্লাশ শেষ
হলেও মাথা নিচু করে বের হতো। রাস্তায় কারো দিকে চোখ তুলে তাকাতো না পর্যন্ত।
ওর সব কিছুই আমাকে যেন আমাকে চম্বুকের মত টানতো।
— তারপর?
— স্কুল গেটের সামনে রোজ দাঁড়িয়ে থাকতাম। আসলে ওকে দেখার জন্যই দাঁড়িয়ে
থাকতাম। ও ঠিকিই বুঝতে পারতো কিন্তু চোখ তুলে তাকানোর সাহস পেত না। হয়তো
সাহসের থেকে লজ্জাটাই বেশি পেতো।
প্রায় ৬ মাস ধরে ওকে ফলো করার পর একদিন প্রথম ওর চিঠি পেলাম। চিঠি দেওয়ার
কৌশল টা ছিলো এরকম, আমি স্কুল গেটে ওর জন্য অপেক্ষা করছি আর ও গেট থেকে
বেড়িয়ে একটা মোচড়ানো কাগজ ফেলে দিয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে বুঝে যায় এটা ওর কোন
বার্তা হবে। আমি কাগজটা হাতে নিয়ে এক দৌড়ে স্কুলের পিছনে আম বাগানটাই চলে
যায়। খুলে দেখলাম ওতে লেখা ছিল “এই ছেলে আপনি ওভাবে রোজ দাঁড়িয়ে থাকেন কেন?”।
লেখাটা পড়ার সাথে সাথেই বুক টা কেমন ধুক করে উঠেছিলো। ওই মুহুর্তে আমার কি
করা উচিত বুঝে উঠতে পারছিলাম না। 
আমি কি উত্তর দিবো ভেবেও পাচ্ছিলাম না। কাউকে কোনদিন চিঠি লেখার অভিজ্ঞতাও
নেই। এদিকে আবার কাউকে বলার সাহস ও পাচ্ছিলাম না। অনেক ভেবে আমার একটা কাছের
বন্ধুকে দেখালাম। ও পরামর্শ দিলো আমি ওকে ভালোবাসি” এটা লিখে দিতে। আমি বললাম
“আমি পারব না, আমার দ্বারা এসব হবে না। আমার ভয় হচ্ছে যদি স্যারকে দিয়ে দেয়
তাহলে আমাকে টিসি দিয়ে দিবে৷ না বাবা থাক আমি বরং ওকে দূর থেকে দেখে যাবো”।
“ভীতু দেখছি কিন্তু তোর মত ভীতু একটাও দেখি নি। আরে কিচ্ছু হবে না। প্রেম
করলে একটু ঝুঁকি নিতে হয়। ”
ও কিছুটা সাহস দেওয়ার পর আমি ঠিক করলাম চিঠির উত্তর দিবো। রাতে সবাই যখন
ঘুমিয়ে পরলো আমি চট করে ডাইরির একটা পৃষ্ঠা ছিড়ে তাতে লিখতে বসে যায়। 
,
আমি এবার গল্প থামিয়ে দিলাম। একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে ফেলতে বললাম,
— কফিটা সুন্দর হয়েছে।
— সত্যি? 
— হুঁ।
— নরমালি আমার নিজের হাতের কফি খেতে ভালো লাগে তবে আজ একটু অন্যরকম ভালোলাগা
খুঁজে পেয়েছি।
— কি রকম?
— লজ্জা করছে?
— লজ্জা? এতে আবার লজ্জার কি আছে?
— মানে এই প্রথম কারো সাথে একই কাপে কফি খাচ্ছি তো তাই । 
আমি আবারো কফিতে চুমুক দিতে দিতে মুচকি হেসে বললাম, 
— তাই নাকি?
— হ্যাঁ স্যার তাই। আর একটা জিনিস,
— কি?
— আপনি কি ঠোঁটের যত্ন একেবারেই নেন না?
— কেন বলুন তো?

— কফির কাপে চুমুক দেওয়ার সময় আপনার ঠোঁটের ছোঁয়া পাচ্ছিলাম তাই মনে হলো।

আমি এবার হো হো করে হেসে উঠলাম। সত্যিই খুব খুশি লাগছে আজ। ওর প্রত্যেকটা
কথায় আমি যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলছি। প্রথম বাসর রাতটা যে এভাবে কাটাবো ভাবি
নি। খুব রোমান্টিক একটা মেয়ে। আমার ফিলিংস গুলো ওকে বলতে পেরে খারাপ লাগছে না
বরং শান্তি পাচ্ছি। আমার ঘোর কাটিয়ে দিয়ে অজান্তা বলে উঠলো,
— তারপর কি হলো বলেন।

বাসর রাতের রোমান্টিক প্রেমের গল্প

— হুঁ। লেখার সময় আমার হাত থরথর করে কাঁপছিলো। 
আর যত নেগেটিভ চিন্তা ভাবনা আছে সব আমার মাথার ভিতরে ঘুরপাক খাচ্ছিলো। কি আর
করব ওকে পাওয়ার জন্য সাহস করে চিঠির উত্তর লিখেই ফেললাম।
— কি লিখেছিলেন?
— লিখেছিলাম “যদি বলি তোমাকে দেখার জন্য”।
— হাহাহহা।
,– হাসছেন কেন?
— এই সামান্য লেখা লিখতে গিয়ে এই অবস্থা?
— আমি ভীতু টাইপের ছিলাম। সব কিছুতেই ভয় পেতাম।
— কি আমার প্রেমিক পরুষ রে! হাহাহাহা।
আচ্ছা তারপর কি হয়েছিলো? চিঠিটা দিতে পেরেছিলেন?
— হ্যাঁ তবে অনেক কষ্টে। চিঠি দিতে গিয়ে মনে হচ্ছিলো এই বুঝি কেউ দেখে
ফেললো। যদি একবার কেউ দেখে ফেলে তাহলে আমি শেষ। কি আর করা তাও কিভাবে যেন
সবার চোখ এড়িয়ে দিয়ে ফেলেছিলাম। চিঠি দেওয়ার পর সেও আমাকে উত্তর দেয়। আবারো
সেই স্কুলের পিছনে আমবাগানে গিয়ে চট করে পড়ে ফেলি। বিশ্বাস করুন ওটা পড়ার পর
আমি ভয়তে ৭ দিন স্কুলে যায় নি। 
— কিইইই ৭ দিন? ওহ মাই গড!
— শুধু ওটা না, আমার খাওয়া-দাওয়া সব বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। শুধু খাওয়া, গোছল আর
ঘুমানোর জন্য বাসায় যেতাম। আর সব সময় বাইরে থাকতাম। এক কথায় পলাতক আসামির মত
থাকতাম। 
— কিন্তু কেন? 
— ওই চিঠির কারনে।
— কি এমন লেখা ছিলো যে লুকিয়ে থাকতেন এভাবে?
— সেদিনের কথা মনে পড়লে আমি নিজেই এসে ফেলি। নিজেকে কেমন বোকা বোকা লাগে।
— আরে বলবেন তো!
— লেখা ছিলো, ” তাই না? আপনার খবর আছে দাঁড়ান। আমি কাল ই হেড স্যারের কাছে
আপনার নামে নালিশ দিবো আর চিঠিও দেখাবো”।
ব্যাস এর পর থেকেই আমার পতিক্রিয়া শুরু হয়ে গেলো। কি আতঙ্কে যে ছিলাম শুধু
আমিই জানি।
,
মেয়েটা আমার কথা শুনে হো হো করে হেসে উঠছে আর ফাঁকে ফাঁকে কফির কাপে চুমুক
দিচ্ছে। মেয়েটার কফি খাওয়াটা খুব ইন্টারেস্টিং। কেমন বাচ্চাদের মতো খায়।
চুমুক দেওয়ার সময় আবার ফু দিয়ে খায়। সত্যি খুব ইন্টারেস্টিং।
— তারপর কি হলো বলেন না।
— তারপর ৭ দিন পার হয়ে যাওয়ার পর আমার ওই বন্ধুর কাছে জানতে পারলাম যে
মেয়েটা কোন নালিশ ই দেয় নি। সব আগের মত স্বাভাবিক।
আর আমাকে নাকি তিশা খুঁজছে। তখন আমি যেন বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। এসব কি
হচ্ছে আমার সাথে? আমি কি করবো বুঝে উঠতে পারছি না। তখন ভয়ে ভয়ে আবার আবার
স্কুলে যাওয়া শুরু করি। এতদিন স্কুল কামাই দিয়েছি বলে স্যার ক্লাসে সবার
সামনে কান ধরে দাঁড় করিয়ে রেখেছিলো। “ওই ছ্যামড়া এত দিন স্কুলে আসছ নাই
ক্যান? বাড়িতে কি ঘোড়ার ঘাস কাটছিস? আজ সকালে তোর বাপের সাথে রাস্তায় দেখা
হইছিলো, তোর নামে নালিশ দিছি”। আজকে বাসায় যাইস খালি।”
এইতো যা ভয় পাচ্ছিলাম ঠিক তাই হয়েছে। আমার এদিকেও গেলো, ওদিকো গেলো। একে তো
সবার সামনে কান ধরে আছি আবার বাসায় গেলে বাবার হাতে উত্তম মধ্যম খাওয়া থেকে
আমাকে কেউ বাঁচাতে পারবে না।
,
আর এই দিকে তিশা আমার করুন অবস্থা দেখে মুখ লুকিয়ে হাসছিলো। আমিও রাগে দুঃখে
দাঁত কড়মড় করে মনে মনে বলছি, “সালার মাইয়া তোর জন্যই আজ আমার এই অবস্থা আর
তুই হাসছিস?” 
— তারপর?
— তিশা বুঝে গিয়েছিলো যে ওর জন্য আমার এই দশা। তাই স্কুলে আসলেও ওর জন্য আর
গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতাম না। ক্লাসে প্রায়ই ও আমার দিকে তাকাতো। মাঝে মাঝে
ওর চোখে চোখ পড়ে যেত। আর যখনই চোখ পড়ত মনে হতো ও যেন আমাকে কিছু বলতে চায়।
হয়তো মেয়েটা তার ভুল বুঝেছে, এখন সরি বলতে চায়। 
আমিও আর ওদিকে ইন্টারেস্ট দেখায় না। আগের মত চুপ চাপ থাকি আর পড়াশোনায় মন
দিই। এভাবে ২দিন যাওয়ার পর আমার অঙ্ক বইয়ের মাঝে একটা চিঠি পেলাম। 
চিঠিটা পেয়ে খানিকটা অবাক হই। ওতে যা লেখা ছিলো যা আমি স্বপ্নেও কল্পনা করতে
পারি নি। এক কথায় যাস্ট আমি নিস্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। বুকের মধ্যে ধুকবুকানি
শুরু হয়ে গিয়েছিলো। মাই হার্ট লিপস্ আপ উইথ জয়।
— বাহ! এখানেও খুব ইন্টারেস্টিং। কি লেখা ছিলো তাড়াতাড়ি বলেন তো আমার আর তর
সইছে না। 
 আমি এবার কফিতে যেই চুমুক দিতে যাবো দেখি কাপ ফাঁকা।
মেয়েটা বললো, 
,– ও সরি আমি এখনই আর কাপ কফি বানিয়ে আনছি। এক দৌড়ে যাবো আর আসবো। তারপর
শুনবো চিঠিতে কি লেখা ছিলো। আর হ্যাঁ ভুলেও কিন্তু সিগারেটে হাত দিবেন না।
আমি মুচকি হেসে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিলাম। মেয়াটা সত্যি তাড়াহুড়ো করে সিড়ি
বেয়ে নিচে নামছে আমি বলে উঠলাম 
– এই পড়ে যাবেন তো! আস্তে আস্তে যান।
তারপর…..
,
,
  চলবে। …

 প্রিয় গল্প পড়তে নিয়মিত ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইটে। 
 ভালো থাকুন।..
Thank You, Visit Again…

Share This Article