Choto Golpo Bangla (সেরা ছোট গল্প) Bengali Short Story

Bongconnection Original Published
6 Min Read

Choto Golpo Bangla (সেরা ছোট গল্প) Bengali Short Story 

Choto Golpo Bangla (সেরা ছোট গল্প) Bengali Short Story
Loading...

Choto Golpo Bangla

নেলপালিশ 
” রিনি মার খাবি কিন্তু এবার, দে দিয়ে দে বলছি ! মাকে ডাকবো কিন্তু এবার ” বনি
বলতে বলতে দৌড়ে গিয়েও রিনিকে ধরতে পারলো না।


 “মা, ওমা , দেখো না রিনি আমার নেলপালিশ গুলো দিচ্ছে না “। বনির কাঁদো
কাঁদো কথা শুনে রুটি বেলা থামিয়ে সুষমা রিনিকে বললো ” রিনি দিদির নেলপালিশ
গুলো দিয়ে দে ভালো চাস তো।নাহলে এই বেলনা তোর পিঠে পড়বে বলেদিলাম “। 
   
               কিছুক্ষন পর সুষমা ঘরে
ঢুকে বনিকে বললো ” এখন পড়ার সময় তুই নেলপালিশ নিয়ে বসেছিস,সামনে পরীক্ষা সেই
দিকে  হুশ আছে তোর? এই নেলপালিশের নেশা তোর পরীক্ষার সর্বনাশ করবে বেশ
বুঝতে পারছি।” 
মায়ের বকাবকি শুনে বনি তাড়াতাড়ি ওগুলো রেখে বই নিয়ে পড়তে লাগলো।
   রিনি পাশ থেকে ফোরণ কাটলো “বেশ হয়েছে , কায়দা করে নেলপালিশ
পরা”।
   বনি রিনির কথার উত্তর না দিয়ে পড়তে লাগলো। 

একটি ছোট গল্প

Loading...
      সুষমার দুই মেয়ে বনি ও রিনি। বনি মাস্টার্স করছে ইংলিশে।
আর রিনি ক্লাস টুয়েলভে পড়ে। বনির নেশা দুই হাতের নখ বড় করে বিভিন্ন ডিজাইন
দিয়ে নেলপালিশ পরা। ছোট্ট থেকেই ওর জন্য বিভিন্ন রঙের নেলপালিশ কিনে দিতে হতো
সুষমাকে। আর কোনো জেদ মেয়ের ছিলো না , নেলপালিশ পেলেই খুশি।


ক্লাস টুয়েলভ পর্যন্ত ইচ্ছা থাকলেও স্কুলের জন্য উপায় ছিল না । কিন্তু কলেজে
উঠেই শুরু করেছে বড়ো বড়ো নখ রেখে নিত্য নতুন ডিজাইন করে। 
    রিনি পুরো উল্টো , ওর ওসব নেই, ভীষণ ডানপিটে। সুযোগ পেলেই দিদির
নেলপালিশ লুকিয়ে রাখে আর দিদিকে খেপিয়ে দেয়।দুজনের মধ্যে ঝগড়া ও হয়
মাঝেমধ্যে। তখন সুষমাকে সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়। 
     কিন্তু দুই বোনের গলায়গলায় ভাব, কেউ কাউকে ছাড়া একরাত
থাকতে পারে না। 
আরো পড়ুন,

      মাস্টার্স কমপ্লিট করে বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষা দিতে দিতে
বনির বিয়ের সম্মন্ধ আসে। ছেলে খুব ভালো চাকরি করে , তিন ভাই। বাবা নেই , মা
আছেন। বড়ো দুই ভাইও ভালো চাকরি করে। তাদের বিয়ে হয়ে গেছে। 
       সব দেখেশুনে বনির বাবা মায়ের খুব পছন্দ হলো। 
ছেলের মা দেখতে এসেছেন আজ, আজই দিন স্থির হবে বিয়ের। 
 বনি ওনাকে প্রণাম করে পাশে বসতেই উনি সাধারণ দুয়েকটি কথা বলে বনির নখ
গুলো দেখে বললেন ” কোনো কাজ মনে হয় করতে হয় না তোমাকে ।নখ গুলো তো
বেশ।” 
বনির মা তাড়াতাড়ি বললেন “আসলে পড়াশোনা নিয়েই থেকেছে ,সেভাবে প্রয়োজন পরে
নি। সময় সব শিখিয়ে নেবে দিদি।”

Choto Golpo Bengali

      সন্ধ্যে বেলায় বনি নখ গুলোকে যত্ন করে নেলপালিশ পরছে,
রিনি দিদির কানের কাছে গিয়ে বলল ” দিদি তোর মনেহয় আর নখ রাখা হবে না, রান্না
করা , সবজি কাটতে গিয়ে সব নষ্ট হয়ে যাবে ।”
রিনির এমন কথা শুনে আগে বনি রাগ করতো ,ঝগড়া করতো।আজ আর তর্ক করতে ইচ্ছা করলো
না। চুপচাপ থেকে গেলো। 

আরো পড়ুন,

         বিয়ের আগের দিন বনি রিনির পাশে শুয়ে
রিনিকে বললো 
“আমার নেলপালিশ গুলো টেবিলের ড্রয়ারে আছে ,তুই পরিস বোন” বলে রিনিকে জড়িয়ে
কেঁদে ফেললো।
রিনি ও কাঁদতে কাঁদতে বললো  “দিদি আমায় কাল থেকে একা ঘুমাতে হবে, আমার
ভয় লাগবে তো। সেই ছোট্ট থেকে তোর সঙ্গে ঘুমাই আমি।”
 ভয় কিসের পাগলী ,মা তোর সঙ্গে ঠিক ঘুমাবে দেখিস বনি বললো। 
   তোর সাথে আর ঝগড়া করতে পারবো না দিদি রিনি দিদির চোখ মুছিয়ে
দিতে দিতে বলল।

শিক্ষনীয় হাসির ছোট গল্প

         বিয়ে প্রায় দুমাস হয়ে গেলো। এই দুই মাস
বনিকে বিশেষ কাজকর্ম করতে হয় নি। দুই জা আর শাশুড়ি মা সব সামলে
নিয়েছেন। 
     সন্ধ্যে বেলা শাশুড়ি মা এবার ডেকে বনিকে পাশে বসিয়ে
বললেন ” তোমাকে এবার তো কাজের ভার নিতে হবে বনি। এখন থেকে শিখতে হবে সব। 
 আপাতত  রাতের রান্নাটা আমি আর তুমি মিলে করবো। আমি আটা মেখে বেলে
দেবো আর সবজি কেটে দেবো তুমি রুটি সেঁকে নিয়ে তরকারি করে নেবে। আমি দেখিয়ে
দেবো কিভাবে তরকারি করবে। 
বনির হাতটা ধরে নখগুলো দেখে বললেন বাঁ হাতের নখে অসুবিধে নেই কিন্তু ডান হাতে
নখ থাকলে আটা মাখতে পারবে না আর ভেঙে ও যেতে পারে তাই ওই দুটো কাজ আমি করে
দেবো। তবেএকটা বাচ্চা কাচ্চা হয়ে গেলে নখ রাখতে পারবে না তখন।যতদিন পারো সখ
পূরণ করে নাও।
     বনি খুব আনন্দ পেলো শাশুড়ি মায়ের কথায়। “মা তোমাকেও
সুন্দর করে পরিয়ে দেবো নেলপালিশ” বনি বলতেই শাশুড়ি মা হেসে ফেলে বললেন ধুর
পাগলী আমার কি সে বয়স আছে এখন। 
     বনি নিজেও সুন্দর করে নেলপালিশ পরে আর দুই জাকেও পরিয়ে
দেয়। 
      বেশ অনেকদিন পর বনি বাপের বাড়ি এসেছে , কয়েকদিন থাকবে
এখানে। ওর বর ওকে দিয়ে চলে গেছে। 
সন্ধ্যে বেলায় মুড়ি চানাচুর খেতে খেতে রিনি বললো কি ভাগ্য রে দিদি তোর , নখ
ভেঙে যাবে বলে শাশুড়ি আটা মাখতে দেয় না। বলেই ফিক করে হেসে ফেললো। 
 বনি রিনির কান ধরে বললো ফাজলামি হচ্ছে না , মার খাবি কিন্তু আবার।
    দুজনে হাসতে হাসতে খেতে লাগলো। 

Share This Article