Independence Day Bengali Paragraph 2023 – স্বাধীনতা দিবস নিয়ে কিছু কথা

Bongconnection Original Published
6 Min Read


 Independence Day Bengali Paragraph 2023 – স্বাধীনতা দিবস নিয়ে কিছু
কথা

Independence Day Bengali Paragraph 2023 - স্বাধীনতা দিবস নিয়ে কিছু কথা
Loading...

Independence Day Paragraph In Bengali

 ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগষ্ট স্বাধীনতা পাওয়ার পর সারা দেশ আনন্দে মেতে
উঠেছিল।প্রায় ২০০বছর বা তার কিছু বেশি সময় ধরে ব্রিটিশদের পদতলে শোষিত হওয়ার
পর সেই বন্দিদশা থেকে মুক্তির আনন্দে মেতে উঠেছিল ভারতবাসী।তখনও হয়তো সেই
মুক্ত আকাশের কোনো এক কোণে বিষাদ ও বিদ্বেষের একটা বড়ো কালো মেঘ অপেক্ষা করছিল
ভারতবর্ষের বুকে কঠিণ ভাবে আছড়ে পড়ার জন্য।নাহ,আমি কোনো গল্প বা কবিতা লিখব
না।বর্তমান ভারতের কিছু পরিস্থিতি দেখে কলমের সাহায্য নিলাম আবার।সাহিত্যরস
নামক বিষয়টি থেকে নিজেকে একটু দূরে রেখেই এই লেখা।

Independence Day Bengali Paragraph

Loading...

যাই হোক,মূল বিষয়ে ফিরে আসা যাক।বিগত ২৪ বছর ধরে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের
গুরুত্ব বুঝেছি।যদিও আমার জন্ম ১৯৮৬ তে।জন্মের পর এর গুরুত্ব বুঝতে ৯-১০
বছর লেগে যায়।যদিও আমার দিদা বলতেন যে-“যার বোধ হবেনা ৯-এ,তার হবে না ৯০
তেও।”তাই ভগবানের কৃপায় ও বাড়ির গার্ডিয়ান দের সহায়তায় স্বাধীনতার বোধ
৯বছরেই মোটামুটি হয়েছিল।যাই হোক যখন ছোটো ছিলাম তখন স্বাধীনতা মানে বুঝতাম
একটা ছুটির দিন।সকাল সকাল স্কুলে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে জাতীয় সঙ্গীত
গাইতে হোতো।তারপর মাষ্টারমশাই দের বক্তব্য শুনে তাদের কড়া নির্দেশে লাইন
মেনে লজেন্স,বিস্কুট সংগ্ৰহ করে বাড়ি ফিরে আসা।দেশনায়ক বলতে তখন নেতাজী
সুভাষচন্দ্র বোস, মহাত্মা গান্ধী,ভগৎ সিং,ক্ষুদিরাম কেই বুঝতাম।তখন টিভি-তে
‘তিরঙ্গা’ বা ‘বর্ডার’-টাই বেশি চলত বা মাঝে মাঝে ‘ক্রান্তি’
সিনেমাটা  চলত।পরিবারের সঙ্গে সেই সিনেমাগুলো দেখা হত দুপুরে ভাত-মাংস
বা মাছের ঝোল দিয়ে আহারান্তে।                                 

স্বাধীনতা দিবস রচনা ২০২৩

 হাই স্কুলে পড়ার সময় দেখেছি আমার বেশ কিছু মুসলমান বন্ধু  হাত
জোড় করে জন-গণ-মন গাইছে।সময় তার মতো এগিয়েছে।পরিবেশ পাল্টেছে,মানুষের মন
পাল্টেছে।বিগত কয়েক বছর ধরে এই দিনটিতে যেগুলো দেখছি তাতে মনের
মধ্যে একটা
প্রশ্ন উঠছে-‘সত্যিই কি আমরা স্বাধীন হয়েছি?’

             ব্রিটিশরা যখন এদেশে এসেছিল
তাদের হাতে তখন বণিকের মানদন্ড।কিছু চাটুকার ও কিছু ক্ষমতালোভী ব্যাক্তিদের
কারণে সেই মানদন্ড পরিণত হয়েছিল শাষন ও শোষনের রাজদন্ডে।তারপর বহু বিপ্লবীর
আত্মত্যাগের মাধ্যমে আমরা অর্জন করেছি এই স্বাধীনতা।

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কিছু কথা


আরো পড়ুন,
 স্বাধীনতা নিয়ে কবিতা
                     
        এখনকার স্বাধীনতা দিবসের শুরুটা হয় কোথাও সকাল
৭টায়,আবার কোথাও সকাল ৯টায়।আমাদের জাতীয় পতাকা বরাবরই তার আভিজাত্য বজায়
রেখেই বাতাসকে সঙ্গী করে গর্বের সাথে উড়তে থাকে।কিন্তু সেই পতাকার তলে থাকা
কিছু মানুষ পরোক্ষ ভাবে জাতীয় পতাকার অবমাননা করেন বিভিন্ন ভাবে।হ্যাঁ,কথাটা
এই জন্যই বলেছি যে,তিরঙ্গা নামক গুটখার প্যাকেট,যেটার গায়ে তিরঙ্গার ছবি থাকতো
সেটা মুখে ঢালার পর জায়গা পেত নর্দমার পাশে।তিরঙ্গার স্ট্যান্ডের সাথে যে চেইন
ফ্ল্যাগ গুলো লাগানো থাকে সেগুলো যখন কোনো কারণে ছিঁড়ে যায় তখন না দেখার ভান
করে তার উপর দিয়ে হেঁটে চলে যাওয়া বা সাইকেল নিয়ে চলে যাওয়ার ঘটনা আকছার
হয়ে চলেছে।সকালটা লতাজীর “অ্যায় মেরে বতন কে লোগো” বা  “আমি সুভাষ বলছি”
দিয়ে শুরু হলেও দিনের শেষটা “আফগান জালেবি” বা “মুঙ্গড়া মুঙ্গড়া”-এর উন্মত্ত
নাচে শেষ হয়।সকালে যারা জাতীয় সঙ্গীতে গলা মেলায় তাদের মধ্যে অনেকেই রাত
নামলে তরল পানীয় খেয়ে সেই মুখেই ছুড়ে দেয় কিছু অশালীন মন্তব্য পাশ দিয়ে
যাওয়া কোনো মেয়ের উদ্দেশ্যে।এটাই কি স্বাধীনতা?আমরা কি আজ সত্যিই স্বাধীন??

ভারতের স্বাধীনতা দিবস নিয়ে কিছু কথা

               এখন করোনার প্রকোপে
বাতাস হয়তো অনেকটাই দূষণ মুক্ত।কিন্তু সেই বাতাসে এখন সাম্প্রদায়িকতার
বিষবায়ু মিশছে প্রতিনিয়ত।চারিদিকে কিছু সুবিধাবাদী মানুষ নিজের
স্বার্থসিদ্ধির জন্য আমাদের মনের মধ্যে এই বিভেদের বীজ বপন করার চেষ্টা করে
চলেছে দিবারাত্র।ঠিক অনেকটা যেরকম ব্রিটিশরা করতেন আর কি!তখনকার কিছু চাটুকাররা
পূনর্জন্ম গ্ৰহণ করে চাটুকারিতা করেই চলেছে সেই সব মানুষের।যারা এই
সাম্প্রদায়িক বিভাজনের বিরোধীতা করছে তারা পাচ্ছে দেশদ্রোহীর তকমা আর যারা এর
সমর্থন করছেন তারা পাচ্ছেন দেশপ্রেমিকের আখ্যা।
এই প্রসঙ্গে বলে রাখি হাই স্কুলে আমার পাশে দাঁড়িয়ে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া
মুসলমান ছেলেগুলি আজও আমার বন্ধুই রয়েছে।

স্বাধীনতা দিবস সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য

             সেই বিগত যুগের কৃষকেরা তখনও
পরাধীন ছিলেন,আর আজও তারা পরাধীন।তখনকার কৃষকেরা লড়াই জানতেন আর সেজন্যই তারা
কৃষক বিদ্রোহ করেছিলেন বেয়োনেট-এর সামনে বুক চিতিয়ে।আর এখনকার কৃষকেরা করছেন
আত্মহত্যা।ঘরের বাচ্চা বাচ্চা কুঁড়িগুলিও আজ ধর্ষিত হচ্ছে নরপিশাচ গুলির
হাতে।প্রতিদিনই প্রত্যেকটা মানুষ নিজের ইচ্ছা গুলোকে মেরে ফেলতে বাধ্য হচ্ছে
পরিস্থিতির চাপে।চোখের জল শুকিয়েছে আজ কালের নিয়মে।আমরা যাদের জন্য
স্বাধীনতার রস আস্বাদন করেছি তারাও কখনো কোনো মুহুর্তে ঘুণাক্ষরেও বর্তমান
পরিস্থিতির আন্দাজ করেছিলেন?নাহ,করেননি!করলে হয়তো তারাও নিজেদেরকে বিরত
রাখতেন।আমরা জনগন,আমরা সব বুঝি।শুধু বুঝি বলবো না,অনেকটাই বেশি বুঝি।তবুও সমাজ
প্রতিদিন আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে সমাজের বুকে ধরা ফাটল গুলো দেখিয়ে দিয়ে
যাচ্ছে।এত কিছু দেখার পরও তাই মনের প্রশ্নের উত্তর দিতে আমরা অক্ষম।আর এই অজানা
স্বাধীনতা দিবসে সামিল হওয়া বেশি বুঝদার জনতার ভাব দেখে দিম্মার কথাটাই বারবার
মনে পড়ে-“যার বোধ হবেনা ৯-এ,তার হবেনা ৯০-তেও।”
আরো পড়ুন, 
                     
   শেষে শুধু এটাই বলব-“হে তিরঙ্গা,তুমি তোমার আত্মমর্যাদা ও
গৌরবগাথা নিয়ে সর্বদা উঁচুতেই উড়তে থাকো।কিন্তু কখনো নীচে তাকিয়ো না।তাকালে
তোমার অবনমন নিশ্চিত এই লজ্জার পাল্টা আঘাতে।তুমি ভালো থেকো তিরঙ্গা।”

Share This Article