একটি মিষ্টি প্রেমের গল্প – Ekti Misti Premer Golpo – Bengali Love Story

Bongconnection Original Published
8 Min Read


 একটি মিষ্টি প্রেমের গল্প – Ekti Misti Premer Golpo – Bengali Love
Story

একটি মিষ্টি প্রেমের গল্প - Ekti Misti Premer Golpo - Bengali Love Story
Loading...

একটি মিষ্টি প্রেমের গল্প

Loading...
– অনিন্দিতা 
“কিরে সোনাই হঠাৎ করে বাড়ি চলে এলি যে? কই কালরাতে যখন ফোনে কথা বললি তখন তো
একবারো বললি না যে আজকে বাড়ি আসবি।”
মায়ের কথায় রিমির মাথাটা হঠাৎ করেই গরম হয়ে গেল। সে চেঁচিয়ে বললো,
“বাপেরবাড়িতেও বুঝি বলে কয়ে আসতে হয় মা? ঠিক আছে তোমার যখন পছন্দ নয় আমি
এখনি চলে যাচ্ছি।”
রিমির মা বিভাদেবী হঠাৎ-ই খিলখিল করে হেসে উঠলেন মেয়ের কথায়। 
মাকে ওভাবে হাসতে দেখে রিমির মাথাটা আরও গরম হয়ে গেল। ও বিরক্তির সাথে বললো,
“উফফ্ ! অমনভাবে হাসছো কেন মা? তুমি কি পাগল হয়ে গেলে নাকি গো?”
“তা শুনি এবারে কত সময়ের জন্যে আসা হলো? সেও কি পিছু পিছু আসছে নাকি?”
“জানিনা আমি তার কথা। নিজের কথা জানি, এবারে আমি এক সপ্তাহ থাকবো এখানে। তোমার
আবার আপত্তি নেইতো? থাকলে আগেভাগেই বলে দাও মা, আমি কোনো হোটেলে চলে
যাবো।”…..রিমি গম্ভীর মুখে তার মাকে বললো কথাগুলো।
“শোনো পাগলি মেয়ের কথা, আমার আবার কিসের আপত্তি রে? কদিন থাকিস বলতো মায়ের
কাছে এসে !! নিজের বর ছাড়া আর কি কিছু বুঝিস তুই সোনাই? বিয়ের তিন বছর ধরেতো
দেখছি আমার মেয়েটাকে, বর অন্ত-প্রাণ মেয়েটা আমার।”……বিভাদেবী হাসতে হাসতে
বললেন।

রোমান্টিক প্রেমের গল্প


“আহ্ ! মা, প্লিজ চুপ করোতো। এসব কথা শুনতে আমার একটুও ভালো লাগছে না। কিছু
রান্না করেছো? আমার কিন্তু খুব খিদে পেয়ে গেছে।”

“যখন থাকতে পারবিনা ভালো করেই জানিস তখন বরের সাথে ঝামেলা করিস কেন সেটাই তো
বুঝিনা। চল খেতে আয়, আমিও খায়নি এখনো জলখাবার। দুজনে মিলেই খেয়ে নিই। লুচি
আর ঘুগনি করেছিলাম আজকে।”…… বলতে বলতে বিভাদেবী খাবার টেবিলের দিকে এগিয়ে
গেলেন। 
আরো পড়ুন, 
খাবার টেবিলে বসে রিমি কৌতূহলী হয়ে বললো, “তা আজ হঠাৎ লুচি, ঘুগনি করলে যে মা?
তুমিতো সাধারণত বাড়িতে সকালের দিকে এসব খাওনা বলেই তো আমি জানি।”
মেয়ের কথায় বিভাদেবী মনে মনে ভাবলেন…… সকালেই তো তার জামাই ফোন করেছিলো
তাকে যে মেয়ে তার রাগ করে বাপেরবাড়ি চলে আসবে। জামাইও যে পিছু পিছু আসবেন
তিনিতো জানতেন সেই কারণেই লুচি, ঘুগনি করে রেখেছিলেন। এই ঘটনা যে তিন বছরে
কতবার হয়েছে তার ধারণা নেই। 

Bengali Love Story Golpo

হঠাৎ তার ভাবনাই ছেদ পড়লো, কারণ দরজার কলিং বেলটা বেজে উঠলো। রিমির মা বললেন,
“দ্যাখতো সোনাই কে এল এইসময়… দরজাটা খোল।”
রিমি মায়ের কথামতো দরজা খুলতেই দেখলো সামনে দাঁড়িয়ে তার বর তমাল। রিমি হনহন
করে এসে খাবার টেবিলে বসে পড়লো। বিভাদেবী মেয়েকে ওভাবে এসে বসতে দেখেই বললো,
“কিরে সোনাই কে এসেছে?”
“আমি জানিনা মা, তুমি দ্যাখোগে যাও কে এসেছে।”
বিভাদেবী দরজার কাছে যেতেই দেখলেন যে তার জামাই তমাল দাঁড়িয়ে আছে। তিনি একমুখ
হাসি নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে বললেন….” ওমা এ যে তমাল এসেছে। তা বাবা তুমি বাইরে
কেন দাঁড়িয়ে আছো, ভিতরে এসো।”

“ভিতরে কি করে আসবো বলুন তো মা। আপনার মেয়ে তো আমাকে একবারো ডাকলো না। আপনার
মেয়েটা যে কেন আপনার মতো হলোনা সেটাই আমার আক্ষেপ।”…… তমাল মুচকি হেসে
একটু জোরেজোরেই কথাগুলো বললো।
তমালের কথা শুনে রিমির গাটা রি রি করে জ্বলছে। ও ওর মায়ের দিকে তাকিয়ে বললো,
“মা, আমার কিন্তু খুব খিদে পেয়েছে। আমাকে কি তুমি খেতে দেবে নাকি দেবেনা সেটা
বলে দাও।”
“কি হচ্ছে এটা সোনাই? তমালকে ওইভাবে দরজায় দাঁড় করিয়ে রেখে চলে এলি কেন তুই?
আর ওকে ফেলে তুই একা খেয়ে নিবি?”
“আপনার মেয়েকে কিছু বলবেননা মা। আপনি তো জানেনই যে ও একদমই খিদে সহ্য করে
থাকতে পারেনা। ওকে খেতে দিয়ে দিন, আমি বাড়ি থেকে খেয়েই এসেছি….এখন আর খাবো
না।”…….তমাল ওর শাশুড়িমাকে বললো।
“মা, তুমি বাটিতে ওর ঘুগনিটা তোলো আমি কটা গরম লুচি ভেজে নিয়ে আসছি। তারপর
তিনজনে একসাথেই খেয়ে নেবো, কারণ আমি ভালোমতোই জানি যে তোমার জামাই এখনো কিছুই
খায়নি।”……রিমি কথাগুলো বলেই রান্নাঘরের দিকে পা বাড়ালো। 
রিমির কথা শুনে শাশুড়ি আর জামাই দুজনে দুজনের দিকে তাকাতাকি করে হেসে
উঠলো। 
খাবার টেবিলে তিনজনেই একসাথে খেতে বসলো। রিমি একচামচ ঘুগনি মুখে দিয়েই বুঝলো
বেশ ঝাল হয়েছে তাই ও উঠে গিয়ে ফ্রীজ থেকে রসগোল্লা বার করে টেবিলে এনে রাখলো।
ওকে রসগোল্লা আনতে দেখে ওর মা বললেন, “হ্যাঁরে সোনাই তুইতো মিষ্টি খেতে
ভালোবাসিস না, তাহলে মিষ্টিটা বার করলি যে এখন?”
মায়ের কথার উত্তরে রিমি বললো, “ঘুগনিতে ভীষণ ঝাল দিয়ে ফেলেছো মা, তিনিতো আবার
ঝাল একেবারেই খেতে পারেন না। তাই মিষ্টিটা এনে রাখলাম।”
রিমির কথা শুনে তার মা বিভাদেবী বললেন, “সত্যি বাবা তোদের ব্যাপার স্যাপার আমি
কিছুই বুঝিনা। এতো যার ওপরে রাগ তার প্রতি আবার এতো খেয়াল !! ধন্য তোদের
ভালোবাসা।”

মিষ্টি প্রেমের ছোট গল্প

************************
খাওয়া হতেই রিমি সোজা নিজের ঘরে চলে গেলো। তমালও পিছনে পিছনে ঘরে এসে ঢুকলো।
তমাল দেখলো রিমি বিছানায় বসে আছে, ও রিমির পাশে গিয়ে বসতেই রিমি সঙ্গে সঙ্গে
উঠে যাচ্ছিল। কিন্তু তার আগেই তমাল খপ করে ওর হাতটা ধরে ফেললো।
তমাল হাতটা ধরতেই রিমি বললো, “কি হচ্ছে কি? প্লিজ আমার হাতটা ছাড়ো। আমাকে যেতে
দাও, আমার অনেক কাজ আছে।”
“না ছাড়বোনা, কি করবে তুমি? আর এখন তোমার কি কাজ আছে শুনি? আর প্লিজ রাগ করে
থেকোনা রিমি আমার ওপরে। আই অ্যাম সরি গো। সেই কাল রাত থেকে রাগ করে আছো, এবার
তো শরীর খারাপ করবে সোনা তোমার।”
“তুমি ঠাট্টা করছো আমার সাথে? রাগ করলে কার শরীর খারাপ হয় গো? তুমি যে আমাকে
বলছো ! তুমি এলে কেন এখানে?”

দুষ্টু মিষ্টি রোমান্টিক প্রেমের গল্প

“আচ্ছা সরি সরি, একটু ঠাট্টা করে ফেলেছি। তোমাকে নিতে এসেছি, আবার কি জন্যে
আসবো? তুমি জানোনা যে তুমি না থাকলে আমার বাড়িতে থাকতে একফোঁটাও ইচ্ছে করেনা?
চলো বাড়ি ফিরে যায়।”
“না যাবোনা আমি, তুমি চলে যাও। কালকে রাতে কতবার করে বলেছিলাম মশারিটা টাঙানোর
জন্যে কিন্তু সেই তুমি শুনলেই না আমার কথা। মশারিটা টাঙানোর ভয়ে আগেই শুয়ে
পড়লে। পরপর দুদিন আমাকে মশারি টাঙাতে হলো। তাহলে আমার কি রাগ হবেনা বলোতো?”
“তার জন্যে তো আমি সরি চেয়েছি রিমি, কি করবো বলো…. সত্যিই খুব ঘুম পেয়ে
গেছিলো। আর প্লিজ রাগ করে থেকোনা, চলো বাড়ি ফিরে চলো। আমি কথা দিচ্ছি, আজকে
মশারিটা আমিই টাঙাবো।”…….তমাল মুখটা কাচুমাচু করে বললো।
“একটা শর্তেই আমি তোমার সাথে বাড়ি ফিরে যাবো।”
“কি শর্ত বলো?”
“তোমাকে আমাকে প্রমিশ করতে হবে যে আজকে থেকে প্রতিরাতে তুমিই মশারি টাঙাবে। বলো
রাজি?”……রিমির মনে মনে ভীষণ হাসি পেল কিন্তু ও নিজেকে কন্ট্রোল করে নিল।
তমাল আর কি করবে ! বেচারা পড়েছে চরম বিপাকে। কিন্তু রিমিকে ছাড়াতো ও থাকতে
পারবেনা তাই রাজিই হতে হবে ওকে রিমির শর্তে। 
তমাল বললো, “তুমি খুব চালাক সোনা, সুযোগের ভালোই সদ্ব্যবহার করলে তুমি। ঠিক আছে
তোমার কথাতে রাজি আমি। তাহলে কাল রাতের পাওনাটা এখন দিয়ে দাও।”
“ইসস্ ! শখ বলিহারি তাইনা? ওসব পাওনা টাওনা ভুলে যাও। রাত গয়ি বাত গয়ি বুঝলে
ডার্লিং। চলো বাড়ি যাই।”……রিমি চোখ পাকিয়ে ওর বরকে বললো।
“ওসব আমি জানিনা, তুমি আমার কাছে এসো। আমার এখন তোমাকে ভালোবাসতে ইচ্ছে করছে,
তাই আমি এখনই তোমাকে ভালোবাসবো ব্যাস। কইগো এসোওওও…।”
বরের এমন ভালোবাসাভরা ডাককে কি আর উপেক্ষা করতে পারে কোনো স্ত্রী !! রিমিও
পারলো না। ওদের মিষ্টি দাম্পত্যের রসায়ন আজ আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল।
আরো পড়ুন,

Share This Article