রোমান্টিক প্রেমের গল্প ১৮+ | Romantic Premer Golpo 18+

Bongconnection Original Published
18 Min Read


 রোমান্টিক প্রেমের গল্প ১৮+ | Romantic Premer Golpo 18+ 

রোমান্টিক প্রেমের গল্প ১৮+ | Romantic Premer Golpo 18+
Loading...


রোমান্টিক প্রেমের গল্প ১৮+

Loading...
স্তন.কম বেশি
অনির্বাণ চক্রবর্তী
“ব্রেস্ট কমাবে মানে? ফাজলামো পেয়েছো? তুমি জানো কি কি সমস্যা হতে পারে এতে?”
মিত্রভানু চেঁচিয়েই বললো।
“সব জেনেবুঝেই ডিসিশনটা নিয়েছি আমি।” চিত্রিতা শান্ত গলায় কিছুটা কাঁপা হাতে
কফিটা ঢালতে শুরু করলো কাপে।
মিত্রভানু নিজের কানটাকে বিশ্বাস করতে পারলো না যেন, সোফায় ধপ করে বসে পড়লো।
“তুমি বিয়ের বাইশ বছর পরে এমন একটা সিদ্ধান্ত আমাকে না জানিয়ে নাও কি করে?
তোমার অডাসিটি কি করে হয় নিজের হাসবেন্ডকে না জানিয়ে এব্যাপারে ডাক্তার দেখাও!”
“ফর্টি টু ডি, এই সাইজটা তো তোমার নেই ভানু, তুমি কি জানো এগুলো বওয়ার
প্রব্লেমগুলো?” চিত্রিতা এবার কিছুটা গম্ভীর।
“আই ডোন্ট কেয়ার। আমার জানার দরকার নেই, আমি এটুকু জানি যে কিছুতেই ওই সার্জারি
আমি তোমাকে করাতে দেবো না।” মিত্রভানু উত্তেজিত হয়ে একটা সিগারেট ধরালো।


“অবভিয়াসলি ইউ নেভার কেয়ারড! প্রত্যেকটা রাতে তোমার পৌরুষত্ব তো ঐগুলোর ওপরই
প্রথম পড়ে, ওগুলোর ওপর গভীর রাতে অয়েন্টমেন্ট মেখে আমি ঘুমোতে যাই, ডিড ইউ এভার
কেয়ার? দিনে মেয়ে যখন বাইরে যায় তখন বিভিন্ন সময়, এমনকি পিরিয়ডস চলাকালীনও
তোমার হাত তো থামে না ভানু! ইউ নেভার কেয়ার।” চিত্রিতা একটানা কথাগুলো বলে একটু
হাঁফিয়ে উঠলো।
“এমনভাবে বলছো যেন শুধু তোমারই ব্রেস্ট বড়ো, বাকিদের তো নেই! আমি বর হয়ে নিজের
বউয়ের বুকে হাত দিতে পারি না? তোমার ফর্টি টু এ.. বি.. হোয়াটেভার ওটার ওপর রাইট
তো আমার!”
“সাইজটা ভালো করে জানো, ফর্টি টু ডি আর আমার শরীরের ওপর অধিকার শুরু আমারই।”

একটি রোমান্টিক গল্প

“ওই ন্যাকা ন্যাকা ফেসবুক পোস্টগুলো দেখে কথাগুলো আসছে নাকি? মিলনের বউ যেরকম
প্রতিদিন আক্ষেপের গল্প-কবিতা লেখে, ওই যে “আমার অভিশপ্ত হৃদয়ের আঙিনায় তোমার
ভালোবাসা অর্থহীন” সর্ট অফ ফাকিং পোয়েমস, তোমাকেও ওই পাগলামোগুলোয় পেলো নাকি?”


“মিলনের বউ তোমাদের আমাদের ওপর রোজ চলা মানসিক অত্যাচারগুলোর কিছুটা প্রতিবাদের
চেষ্টা করে, পাগলামো বলতেই পারো, তোমরাই তো বলবে, আশ্চর্য কি?”
“তা আমি জানতে পারি আপনার হঠাৎ এই সিদ্ধান্তের কারণ কি?”
“আমি আর পারছি না এগুলোকে বয়ে নিতে, শরীরে রোজ, পিঠের পেন প্রচন্ড বাড়ে সময়ে
সময়ে, তাছাড়া ঘরের কাজ করবার সময়ে ব্যালান্স করতেও সমস্যা হয়।
কি দরকার বলতো ভানু এগুলোর?”
বরের পিঠটা খামচে ধরে চিত্রিতা।
 “আমি তো পুরো বাদ দিচ্ছি না, একটু কমাচ্ছি।”
“আর সেক্সলাইফটা চুলোয় তুলছো তাহলে?”
“কেন চুলোয় তুলবো? আমি তো খানিকটা কমাচ্ছি মাত্র, তোমার কি এমন অসুবিধে হবে?”
মিত্রভানু রেগে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে ব্যালকনিতে দাঁড়ালো।
তার মাথায় হাজারো রাগের পোকা কিলবিল করছে।
কি করে ও বলবে যে তার নিজের বউয়ের বড়ো স্তন তার পৌরুষের গর্ব, কি করে সে
অস্বীকার করবে যে তার চিত্রিতার প্রতি অনেকদিন আগের ভালোলাগাটার জন্ম,
কোনোভাবেই পরিপক্ক স্তনযুগলের জন্য হয়নি?
বরদের অ্যাসেট তো বউয়ের স্তন।
তাই না?
মিত্রভানু ঘরে ঢুকলো আবার।
“রিতা, প্লিজ এরকম কোরো না, আচ্ছা আমি তোমাকে এই মাসে একটা গোল্ড নেকলেস কিনে
দেবো।”

“বিষয়টা এখন দেওয়া-নেওয়ার পার্সপেক্টিভ নয় ভানু। দেখো।” চিত্রিতা ব্রাটা নামিয়ে
কাঁধের দগদগে ক্ষতটা দেখায় মিত্রভানুকে। স্ট্র্যাপটা কেটে বসে গেছে যেন কাঁধে।

রোমান্টিক ভালোবাসার ছোট গল্প

“রোজ বোরোলিন দিয়ে আমি ঘুমোতে যাই ভানু, এই ভারী ব্রেস্টগুলোর জন্য এই জিনিসটা
সবসময় পরে থাকাটা চাপ।”
“বাড়িতে তো ম্যাক্সি পরেই থাকো, এখন তো শাড়ি পরা চুলোয় উঠেছে মেয়েদের। সেইসব
দিন ছিল মায়েদের যখন ওঁদের দেখলেই মনে একটা পবিত্র ব্যাপার জেগে উঠতো। এখন
তোমাদের কিসের চাপ? তাছাড়া ব্রা তো আর সবসময় পরতে হয় না।”
“অনেক সময়ই হয়। ব্রা ছাড়া তুমি আমাকে এলাও করো কারুর সামনে?তাছাড়া আমার কোনো
জামা-কাপড়ই ফিট করে না। রেস্টুরেন্টে খেতে গেলেও ভীষণ ব্যালান্স করতে সমস্যা
হয়। পিঠে ব্যথাটা তো বললামই, প্লিস ভানু, বিশ্বাস করো সেক্সলাইফ কিছুতেই
হ্যাম্পার হবে না। বেশি কমাবো না আমি, অন্তত থার্টি এইট।”
“এসব ন্যাচারাল জিনিসে কিভাবে সার্জারি হতে পারে, ব্রেস্ট ক্যান্সার হতে পারে
সেটা জানো?”
“যতদূর জানি হবে না। তাছাড়া আমার যিনি ডাক্তার তিনি কলকাতার একজন সেরা
প্লাষ্টিক সার্জেন।”
“বালের ডাক্তার, বালের সার্জেন।”
“মাই উবের ইস অন দা ওয়ে ভানু। ”
“গাড়িটা তো ছিল।”
“উবেরে যাবো।”
“টাকা আছে তোমার কাছে?”
“ম্যানেজ করে নেবো।”

আবেগি ভালোবাসার গল্প

“আমি উবেরের কথা জিজ্ঞেস করিনি, এই যে কিসব ব্রেস্ট অপারেশন করাবে, টাকা আছে
তোমার কাছে? রোজগার করো? মাসের পর মাস অ্যাভন, অরিফ্লেম আর কি কি সব আছে, এগুলো
দিয়ে সর্বাঙ্গে মাখার পর আজকে ইউ আর সেয়িং টু রিডিউস ইউর টিটস!”
চোখ ফেটে কান্না আসে চিত্রিতার।
Also read, 
Premer Golpo | প্রেমের গল্প | Bengali Love Story


“আমার বাবা আমার জন্য কিছু টাকা রেখে গেছেন মিস্টার মিত্রভানু, তোমার দয়া
চাইছিনা এক্ষেত্রে। আর সেকেন্ড থিং, এই যে এতগুলো বছর তোমার মাকে দেখেছি নিজের
বাবা মাকে ট্রিট না করে, বাচ্ছা মানুষ করেছি কোনোদিন ন্যানি রাখতে হয়নি তারই
বিনিময়ে তো থাকতে পারি আমি তোমার বাড়িতে তাই না মিস্টার কর্পোরেট?” চিৎকার করে
উঠলো চিত্রিতা।
মিত্রভানুর চোখের সামনে দিয়ে বিদায় নিলো সে।
[“#এই_দেখ_নিমাই_আসছে…”]
[“কি রে এবার একটা বয়ফ্রেন্ড খোঁজ…”]
[“সবই ঠিক আছে ব্রেস্টটা আরেকটু বাড়ালেই ব্যস…”]
[“সরি স্নেহা, আমি সম্পর্কটায় এগোতে পারবো না…”]
[“সরি স্নেহা, আই লাইক ইউ এস আ ফ্রেন্ড..”]
[“শোন না, আমি তো তোর ক্রাশ ঠিক আছে, সারাজীবন থাকতে রাজি আছি বাট তোর ফ্রেন্ড
অমৃতা, উফফফ… “]
[“পাত্রপক্ষ ফোন তুলছে না গো, স্নেহা তোর বাবাকে ডাক..”]
[“আপনার মেয়ের জন্য আরো ভালো ছেলে পেয়ে যাবেন…”]
[“এই তুই প্যাডেড ব্রা পরতে পারিস তো, ছেলেরা বাইরে থেকে কি বোঝে? “]
[“আর কি, প্যাডেড পরেই একটা ছেলেকে তোল, অবন্তী তো এভাবেই… “]
[এইই..দেখ.. নিমাই… আসছে…….]
ধড় মড়িয়ে ঘুম থেকে উঠে বসলো স্নেহা, দুঃস্বপ্নটা আবার এসেছিলো। এবার
ফ্ল্যাশব্যাকগুলো আরো স্পষ্ট। অতগুলো চরিত্র সিনেমার মতো চোখের সামনে আসে
ইদানিং।
পুরো ঘেমে জবজব করছে সে। আগে মা মুছিয়ে দিতো, এখন দেয় না।

আদরও করে না আগের মতো। আসলে রিয়েল লাইফটা ফেসবুকের গল্পের আদরের মা মেয়ের মতো
অনেকসময়ই হয় না।

আর নিতে পারছেনা স্নেহা এটা। জাস্ট ছোট বুক বলে ও লাইফে যা সাফার করেছে সেটা
বলে বোঝানো যাবে না।
সেজন্যই জীবনের একটা বড়ো সিদ্ধান্ত সে নিয়েছে।
“কি রে কোথায় যাচ্ছিস এই ভরদুপুরে? এই সময়ে হঠাৎ বাইরে পরার ড্রেস বার করলি
যে?” স্নেহার মায়ের গলাটা যেন বাইরের চৌত্রিশ ডিগ্রির চাইতেও গরম।
“মাধবীর বাড়ি যাচ্ছি মা, ওর বিয়ের কেনাকাটা করার আছে।” স্নেহা নির্লিপ্ত মুখে
মিথ্যেটা বললো।
“তাও যদি নিজের বিয়েটা ঠিক মতো হয়ে যেত!” মা গজগজ করতে থাকেন।
“এনাফ মা, আমি বিয়ে করতে চাইছি না এমন নাকি! আমাকে ড্রেস চেঞ্জ করতে দাও দয়া
করে।”
দরজাটা বন্ধ করে দেয় স্নেহা আবার।
নগ্ন হয়।

রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প কাহিনী

আয়নার সামনে গিয়ে দেখে নিজেকে, ভগবান সব কিছুই তাকে দিয়েছেন, শুধু কিভাবে যেন
তিনি দুটো পরিপূর্ণ স্তন আঁকতে ভুলে গিয়েছেন।”
থারটি এ সাইজের এই স্তনদুটো গত চারমাসে ছজন পাত্রের পছন্দ হয়নি।
সরকারি চাকরি থেকে প্রাইভেট চাকরি তারপর বাবা এখন কন্ট্রাকচুয়াল চাকরি করে এমন
ছেলেও খুঁজছেন।
কেউ পাত্তা দেয় না স্নেহার মিউজিকে এমএ ডিগ্ৰীটাকে।
কেউ পাত্তা দেয়না স্নেহার এই সুন্দর মুখটাকে আর তার ছোট্ট মনটাকে।
সেজন্যই স্নেহা সিদ্ধান্ত নিয়েছে শহরের এক নামজাদা ডাক্তারের কাছে নিজের দুটো
ব্রেস্টদুটো দেখিয়ে সেটাকে বড়ো করবে।
তারপরই সে নিজের মনটাকে বিষাক্ত করে ফেলবে, পুরুষজাতিকে সেও দেখাবে কিভাবে একটা
মেয়েকে দেখা উচিৎ।
কি না করেনি ও এগুলোকে বড়ো করবার জন্য, ওর বন্ধু অর্পিতা তো বলেছিল যে
বয়ফ্রেন্ডকে দিয়ে নিয়মিত বক্ষমর্দণ করালে নাকি বুকটা বাড়বে।
স্নেহার তো বয়ফ্রেন্ডই নেই।
Also read, 

“আহা হুকআপ কর না! টিনডার আছে, ওকে কিউপিড আছে, তিনমাসে বত্রিশ, ছমাসে চৌত্রিশ,
অলসেট, তারপর বিয়ের পিঁড়িতে বসে পর।
ঘেন্না লেগেছিলো।
সব মেয়ে বোধহয় একইরকম ভাবতে পারে না।
আচ্ছা ওই যে গতকাল ফেসবুক গ্রূপে একজন কবি একজন মেয়ের চোখদুটোকে চাঁদ, আকাশ আর
প্রকৃতির সাথে তুলনা করে একটা অসাধারণ কবিতা লিখলেন, কাব্য যেটাকে বলে, আর লোকে
এত প্রশংসা করলো! তাহলে তো এমন ছেলেরা আছেই নিশ্চই যারা একটা মেয়ের শরীর নিয়ে
ভাবিত নয়।
“বাল।” স্নেহা চমকে উঠলো।
নগ্ন প্রতিবিম্বটা বলে উঠলো কি?
চোখ থেকে দুটো লবণের ফোঁটা পড়লো ক্লিভেজের ওপর।
অবশ্য ছোট স্তনের ক্লিভেজ হয় না, করুণা হয়।
কান্নার মধ্যেই হেসে উঠলো স্নেহা।
আচ্ছা মায়ের ব্রাটা কি সুন্দর না? স্নেহার ব্রায়ের চাইতে তো অনেক বড়ো।
তাহলে মা আমার সাথে গত দশ বছর শোয় কেন?
নিজের প্যাডেড ব্রাটা পরতে গিয়েও থমকে গেল সে, আজ আর সে এটা পরবে না।
ফোনে নোটিফিকেশন এলো, স্নেহা চমকে উঠলো কিছুটা। উবেরটা চলে এসেছে।
শেয়ার ক্যাব।
বাড়ি থেকে বেরিয়ে ক্যাবটায় উঠতে গিয়ে দেখলো অলরেডি কো-প্যাসেঞ্জার বসে।
একজন ভদ্রমহিলা, চল্লিশের ওপর বয়েস।
স্নেহা নিজের স্মার্টফোনটায় ভদ্রমহিলার নামটা দেখলো, চিত্রিতা ভট্টাচার্য।
অনেকখানি রাস্তা, প্রায় পঞ্চাশ মিনিট।
আচ্ছা লোকাল ট্রেনে যেমন খুব সহজেই পাশের প্যাসেঞ্জারের সাথে গল্প করা যায়,
উবেরেও কি যায়?
অবশ্য আজকাল কেই বা যেচে আলাপ পছন্দ করে?
ফোনে ক্যান্ডি ক্রাশ খেলতে থাকলো স্নেহা।
“তোমার ড্রপ কোথায়?” ভদ্রমহিলা স্মিতহেসে জিজ্ঞেস করলেন নিজে থেকেই।
“পার্কস্ট্রিট।” স্নেহা উত্তর দেয়।
“আমিও তো পার্কস্ট্রিট, ওখানে কোথায়?”
“একটা ডাক্তারের চেম্বার।”
চিত্রিতা আর ঘাটালো না। কি জানি যদি মেয়েটা রেগে যায় এটা শুনে যে চিত্রিতাও
বলছে যে সেও ডাক্তারের কাছে যাচ্ছে।
“আপনি পার্কস্ট্রিটে কোথায়?”
“এ.. একটা ডাক্তারের চেম্বারে আমিও যাচ্ছি। প্লাস্টিসিয়ান ক্লিনিক নাম।”
“সেকি! আমিও তো ওখানেই!” স্নেহা কিছু উত্তেজিত হয়।
“তাই নাকি! আমার ডাক্তার সুলগ্না পাল।”
“আমারো।”
দুজনেই চুপ করে যায়।
আসলে ডাক্তার সুলগ্না পাল এই শহরের নামকরা প্লাষ্টিক সার্জেন শুধু নন, গুগলে
ব্রেস্ট সার্জারি সার্চ করলে ওনার নামই সবার আগে আসে।
“যদি কিছু মনে না করো, কি জন্য যাচ্ছ?” চিত্রিতা কিছুটা চাপা গলায় জিজ্ঞেস করে।
যদিও বিহারি ড্রাইভার তবুও ভরসা নেই, মেয়েলি ব্যাপার যত কম পুরুষের কানে যায়
ততই মঙ্গল।
“ব্রেস্ট এনহান্সমেন্ট করাতে, আপনি?”
“ব্রেস্ট রিডাকশন করাতে।”
দুজনে আবারো চুপ করে যায়।
হঠাৎ গাড়িটা থেমে যায়।
“সিএম কা গাড়ি জায়েগা ম্যাডাম, থোড়া ওয়েট কারনা হোগা।”
গুটখার প্যাকেটটা খুলতে খুলতে ড্রাইভার সাহেব খবরটা জানান।
স্নেহা আচমকা কেঁদে ফেলে।
“কি হয়েছে, এনি প্রব্লেম?” চিত্রিতা চমকে ওঠে।
“না, সরি, আসলে আমি একটু ঘেঁটে আছি।” চোখের জলটা মুছে স্নেহা বলে।
“ইটস ওকে, কিন্তু তোমার এত কম বয়েসে অপারেশন করেছো কেন? বিয়ে হলে না হয়…”
“বিয়েটা ওইজন্যই হচ্ছে না তো।”
“কি বলছো! ব্রেস্টের জন্য!” গলাটার আওয়াজের প্রতি খেয়াল রাখে চিত্রিতা।
“প্রকারান্তরে তাইই। হালকা করে বুকের দিকে তাকানোতেই বুঝি মডার্ন পাত্রদের।”
হালকা হাসে চিত্রিতা।
সেই বুকের জমি প্রথম তৈরী হবার পরে সেও অবাক হয়ে যেত যে কিভাবে বাইরের পুরুষেরা
ওর ওই ছোট্ট উঁচু মাংসপিন্ডের দিকে তাকিয়ে থাকে।
কোনো মেয়ের কিন্তু প্রথম প্রথম স্তন নিয়ে কোনো লজ্জা থাকে না, লজ্জাটা সমাজ
তৈরী করে দেয়।
বাকিটা ইসট্রোজেন, মায়ের চোখ রাঙানী আর একটা সাদা ব্রা।
চিত্রিতারও এখন আর অসহ্য লাগে না বছর বাইশের ছেলে থেকে আধ দামড়া লোকগুলোর
চোখগুলোকে, এমনিতেও তো মেয়েদের ডানহাত বামহাত সারাজীবনই বুকের আঁচল ঠিক করেই
যায়।
চিত্রিতা ভাবতে লাগলো মিত্রভানুর এসব কথাগুলো অসহ্য লাগে।
উবেরটা ছেড়ে দিলো।
“কিন্তু তুমি তো প্রেম করতে পারতে, সব ছেলেই কিন্তু একরকম হয় না। ভালো প্রেমিকও
তো আছে।” চিত্রিতা বলে।
“পাইনি ম্যাডাম কখনো। একজন লেখককে পছন্দ হয়েছিল, সেও দেখলাম রাতে ব্রা পরা
ছবিটাই চাইলো। লেখকরা ওরকমই, খালি মুখে বড়ো বড়ো বাতেলা আর কাজের বেলায়, সব
ছেলেই এক।” দীর্ঘশ্বাস ফেললো স্নেহা।
চিত্রিতা ভাবতে লাগলো যে সত্যিই সমাজে পুরুষদের কাছে স্তনের চাইতেও ব্রায়ের
প্রতি আকর্ষণ বেশি, মিত্রভানু সর্বদা ওকে কালো বা লাল ব্রাতে দেখতে পছন্দ করে।
তখন আর ফর্সা ব্রা ভালো লাগে না।
“আপনি যে সার্জারি করাবেন আপনার হাসবেন্ড রাগলেন না? অবশ্য খুবই ব্যক্তিগত
প্রশ্ন, আপনি উত্তর নাই দিতে পারেন ম্যাডাম।” চিত্রা কুন্ঠিত হয়ে জিজ্ঞেস করে।
“ম্যাডাম বলতে হবে না, দিদি বলেই ডেকো।” মিষ্টি হেসে চিত্রিতা বলে, “হ্যাঁ, রাগ
তো একটু করেছে ঠিকই কিন্তু সার্জারি তো আমি করাবোই।” দৃঢ় স্বরে বলে সে।
স্নেহা বাইরের আকাশটার দিকে তাকায়। তারপর ধরা গলায় বলে, “জানেন তো ক্লাস
টুয়েলভে পড়ার সময় হঠাৎ ক্লাসে ঢুকতে গিয়ে শুনি ‘এই দেখ নিমাই এলো!’ সেটা আমারই
এক বন্ধু সীমা বলেছিলো। মানেটা প্রথমে জানতাম না জানেন? তারপর জানতে চোখ ফেটে
জল এসেছিলো। তারপর কলেজেও কিছু ছেলে সমাস করে বলত, ‘নেই মাই যাহার।’ আড়ালে বলত,
সামনে বন্ধুর অভিনয় করতো। তাই মনে হলো, আপনি অপারেশনটা নাই করাতে পারতেন। আমি
সারাজীবন দুটো বড়ো স্তনই চেয়ে এসেছি, আর আপনি সেটাকে কমিয়ে দিচ্ছেন? আপনার
পার্সোনাল সম্পর্ক কিন্তু হ্যাম্পার করবেই।”
স্নেহার জীবনের গল্প শুনে চিত্রিতা চোখের দুফোঁটা জল মুছলো।
“আমি আর নিজের শরীরকে ভালোবাসিনা গো। আসলে ছোটবেলায় বাবা ছোট ড্রেস পরতে দিতেন
না, আমার আবার খুব বাড়ন্ত শরীর ছিল কিনা। মাও চোখে চোখে রাখতেন, বুকটা সর্বদা
ঢেকেই থাকতো। তারপর বিয়ের পর বরও দেখলাম বাইরে বেরিয়ে একটু ব্রায়ের স্ট্র্যাপ
বেরিয়ে থাকলেও চোখ রাঙিয়ে তাকাচ্ছে। প্রথম থেকেই আমি আমার স্তনদুটোকে ঘেন্না
করি! এটা আমার শরীরের অংশ নয় মনে করি না। শুধু একটাই গুরুত্ব এগুলোর যে আমার
বাচ্চাটা দুধটুকু পেয়েছে। বাকিটা শোঅফ। তবে আমিও তোমার এই বয়েসে বাড়িতে না
জানিয়ে বিয়ের আগে ছুড়ি কাঁচি চালানোটা পছন্দ করবো না।”
“আপনার কি মনে হয় এটা আমি বিয়ে হবার জন্য করছি?” চোখে আগুন রেখে বলে স্নেহা,
“জাস্ট বিয়ের জন্য! না, দিদি, বাবাকে না জানিয়ে আমার সেভিংস একাউন্টের টাকা
নিয়ে আর গত দুবছরের টিউশন পড়ানোর টাকা একসঙ্গে করে আমি এই সার্জারিটা করে কোনো
ছেলেকে হাতের সুখ করতে দেবো না। আমার স্তনের ডেফিনিশন শুধু আমারই থাকবে, ওটা
কারুর জন্য মাই, কারুর বুবস, কারুর দুধ বা কারুর টিটস হতে, আর আমি দেবো না।
আর আমি অনেকের সাথে দেখা করবো আসলে, আফটার আই চেঞ্জ, সেইসব সমাজের নোংরা
লোকগুলোর আর মহিলাগুলোর সাথে গেমটা তখনই জমবে।”
“জাস্ট রিভেঞ্জের জন্য এত বড়ো স্টেপ?”
“আপনি বুঝবেন না, একটা মেয়েকে যখন নারীত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়, রোজ, তখন একটা
সময়ে সেও পুরো রিভার্স গেম খেলতেও জানে।”
গাড়িটায় সূর্যের পড়ন্ত আলো পড়ছে।
দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে, তাদের গল্পের চরিত্র, একটাই অঙ্গ।
“ঠিকই বলেছো স্নেহা, আমিও তাই ভাবি, আমার শরীর আমার সিদ্ধান্ত, আমার স্তন, আমার
নিয়ম। এগুলো কারুর ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয় যেটা সিঁদুরের সাথে আমার বর পেয়েছে।”
হাসে চিত্রিতা,
“এটা একটা টক্সিক ইচ্ছের দাম স্নেহা, যেটা আমরা দিতে চলেছি।”
“হ্যাঁ, দিদি। এমন একটা ইচ্ছে যেটা হয়তো সেফ নয়, হয়তো স্তনটা বাড়ালে সারা জীবন
কিছু না কিছু সাইড এফেক্ট থাকবেই, হয়তো এই দুটোর চিনচিনে ব্যথা সারা জীবন আমাকে
আজকের সিদ্ধান্তের কথাটা মনে করাবে কিন্তু, আমি তাও, ভগবানকে চ্যালেঞ্জ করবো,
যদি বিজ্ঞানই ভগবান হয় তাহলে সার্জারিই আমার ভবিতব্য।”
উবেরটা পৌঁছোয় ক্লিনিকের সামনে।
চিত্রিতার নাম আগে ডাকা হয়।
“দেখুন ম্যাডাম, আপনার ক্ষেত্রে যে প্রসেসটা হবে সেটার নাম রিডাকসান
ম্যামোপ্লাস্টি, যেটার মাধ্যমে আপনার স্তনের অতিরিক্ত ফ্যাট, গ্ল্যান্ডুলার
টিস্যু আর স্কিন, বের করে নেওয়া হবে। বাট ইফ আই আস্ক ইউ, আপনি কেন করছেন এটা?”
ডক্টর সুলগ্না জিজ্ঞেস করলেন চিত্রিতাকে।
“পিঠে খুব ব্যথা হয়, তাছাড়া ব্যালান্স করতে পারি না মাঝে মাঝে। শেপটা বড়ো হওয়ায়
মেন্টেন করতেও সমস্যা।”
“কিন্তু আপনি তো জিম জয়েন করতে পারতেন, টোনড হতে তো বেশি সময় লাগে না।”
“চেষ্টা করেছিলাম, পারিনি। আসলে গল ব্লাডার অপারেশনটার পর আর এসব হয় না।”
“আসলে আমরা প্রত্যেকেই অজুহাত দিতে ভালোবাসি। আইডিয়ালি তো আমার সার্জারি করবার
কথা, টাকাটাও নেবো কিন্তু আমার কথা শুনলে আই উড সাজেসটেড ইউ আ বেটার সলিউশন।”
“সার্জারিটাই করাবো। বিশাল কিছু সাইড এফেক্ট হবে কি?”
“একেবারেই না, প্রথম কয়েকদিন একটু অস্বস্তি হবে কিন্তু তারপর আপনি হালকা ফিল
করবেন।”
কিছু টেস্ট আর সার্জারির তারিখটা লিখে দেন তিনি।
“তোমার প্রসেসটা ব্রেস্ট অগমেন্টেসন  বা এনহান্সমেন্ট সার্জারি হবে যেখানে
সিলিকন জেল ইমপ্লান্ট করা হবে তোমার ব্রেস্টে। সার্জারির কয়েকদিন একটু
ডিসকমফোর্ট হবে বাট সয়ে যাবে। কিন্তু এই বয়েসে কেন ওসব করাচ্ছো? ইউ আর হেলদি
রাইট?”
“নট মেন্টালি।”
একটু হাসেন সুলগ্না। তার অভিজ্ঞ চোখ খুব বেশি সময় নেয় না এসব কেসে।
চেম্বার ছাড়ার আগে চিত্রিতা স্নেহার মোবাইল নম্বর নেয়।
“যেদিন ফ্রি থাকবে, চলে এসো বাড়িতে।”
“নিশ্চই,” হাসে স্নেহা।
চিত্রিতা বাড়ি ফিরে দেখে মিত্রভানু মুখটা গোঁজ করে বসে আছে।
“শেষমেশ করাবেই ঠিক করলে?”
“হুমম।”
“বাহ্।”
ঘর থেকে বেরিয়ে যায় মিত্রভানু।
চিত্রিতা জানালার বাইরে তাকায়।
সূর্যটা অস্ত যাচ্ছে।
Also read, 

Share This Article