বড়দের গল্প – পারমিতার প্রেমকথা – Bengali Adult Story

Bongconnection Original Published
10 Min Read


 বড়দের গল্প – পারমিতার প্রেমকথা – Bengali Adult Story

বড়দের গল্প - পারমিতার প্রেমকথা - Bengali Adult Story
Loading...


পারমিতার প্রেমকথা
শ্রাবন্তী মিস্ত্রী
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য
‌আমি পারমিতা,উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার একটা ছোট্ট গ্ৰামের মেয়ে।আর পাঁচটা
মেয়ের মতোই জন্মেছিলাম একটা সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে। পরিবারে অভাবের সঙ্গে
সংগ্ৰাম করে কোনোরকমে চলছিল আমাদের চারজনের সংসার। বাবার ছিল লেখাপড়ার প্রতি
গভীর টান তাই নিজের অসফল স্বপ্ন গুলোকে সত্যি করতে চেয়েছিলেন আমাদের দুই ভাই
বোনকে উচ্চশিক্ষিত করে। লেখাপড়ায় আমরা খুব মেধাবী না হলেও খুব খারাপ ও ছিলাম
না।বাবা নিজের জমিতে চাষাবাদ আর অন্যের জমিতে দিনমজুর খেটে হাসি মুখেই আমাদের
সব প্রয়োজন মেটাতেন।বাবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা আর ভাইয়ের প্রতি ভালোবাসা
থাকলেও ছোট থেকেই আমি শুরু করেছিলাম ঘেন্না করতে পরিবারের বাইরের সমস্ত পুরুষ
জগৎ টাকে।আর তার উপযুক্ত কারণ ও ছিল অবশ্য।

বড়দের রোমান্টিক গল্প

Loading...
‌বয়স তখন সাত কি আট গ্ৰামের প্রাইমারি স্কুলের ক্লাস থ্রি র ছাত্রী তখন।কাজ
বলতে শুধু পড়াশোনা আর মাকে বাড়ির কাজে অল্পবিস্তর সাহায্য।এই শিশু বয়সেই এক
মানুষরূপী রাক্ষসের কুদৃষ্টি পড়ে আমার উপর লোকটা আর কেউ নয় বাবার বন্ধু দীপক
কাকা।বেঁটে কালো মোটাসোটা এই লোকটাকে একদমই ভালো লাগতো না আমার না ওর চেহারার
জন্য নয় ওর আচরণের জন্য।লোকটা প্রায়ই আসতো আমাদের বাড়িতে রাতে মাঝেমধ্যে
খাওয়ার ও খেতো আমাদের সাথে। আমাদের পরিবারের সাথে ভালো ই সম্পর্ক ছিল ওর।একদিন
রাতে মায়ের দরকার পড়লো লঙ্কার সেদিন বাড়িতে ওই লোকটাও ছিল।মায়ের তৈরি
লঙ্কাগাছ গুলো ছিলো বাড়ির পিছনের বাগানে।লোকটা মাকে বললো যে আমার সাথে যাবে
মাও সম্মতি দিলো তখন কারেন্ট এসে পৌঁছায়নি তখন গ্ৰামে ল্যাম্পই একমাত্র
ভরসা,আর বাড়ির পিছনের জঙ্গল টাতে তখন ছিল শেয়ালের উৎপাত।লোকটা এই সুযোগ টাই
খুঁজছিল তখনো বুঝিনি আমি লঙ্কা তোলার পর বাড়ি ফিরতে যাবো হঠাৎ লোকটা হাতের
ল্যাম্পটা নিভিয়ে জড়িয়ে ধরে কোলে তুলে ঠোঁটে চুমু খেতে শুরু করলো
আমায়।বিষ্ময়ে দম আটকে এলো আমার কান্না দলা পাকিয়ে এলো গলার কাছে। কিন্তু
কিছু বলতে পারলাম না কাউকে ভয়ে। একদিন লোকটা আমাকে বললো তোকে বিয়ে করবো
আমি,ভয়ে শিউরে উঠলাম আমি।লোকটা বয়সে ছিল আমার মায়ের চেয়ে ও বড়ো।লোকটা র
সাথে মাঝে মাঝে আমাকে পাঠাতো দরকার হলে কিছু আনার,আমি যেতে চাইতাম না কিন্তু
বাবা মা কারণ টা কখনো স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেনি তাই বাধ্য হয়েই আমাকে যেতে
হতো আর ওই লোকটা এই সুযোগ টাকেই কাজে লাগাতো।একটা শিশুর উপর ই তার যৌন খিদে
মেটাতে ব্যস্ত হয়ে পড়তো।লোকটার ভয় ছিল তাই নানারকম ভাবে ভয় দেখাতো আমাকে সে
নাকি বাবাকে অনেক সাহায্য করে তা না হলে আমার পড়াশোনা টাই নাকি বন্ধ হয়ে
যাবে।বাবা লোকটাকে ভালোবাসতো তার পরিবারের কেউ ছিল না তাই,নিজের ভাইয়ের মতো।
কিন্তু তার মধ্যে থাকা হিংস্র মানুষ টার খোঁজ পায়নি কখনো।


‌তখন ক্লাস ফোর একদিন দুপুরে স্কুল থেকে ফিরছি শর্টকাট হিসাবে বাগানের মধ্যে
দিয়ে বাড়িতে, হঠাৎ এক পুরুষ জাতির কলঙ্ক পাড়ার এক দাদা জড়িয়ে ধরলো
আস্টেপিস্টে।ভয়ে গলাকাঠ চিৎকার করলেও শোনার কেউ নেই সেখানে। কিছুক্ষণ মিনতি
করলাম সে বললো প্রতিদিন আসিস এই রাস্তা দিয়ে তোকে আমি কামরাঙা দেবো রোজ।হঠাৎ
কি মনে হলো জোর কামড় দিলাম ওর হাতে হাঁপাতে হাঁপাতে বাড়ি ঢুকলাম কোনো
রকমে।এইভাবে আতঙ্ক নিয়েই বেড়ে উঠছিলাম আমি। একদিন দেখলাম বাজারে জাদুখেলা
দেখানো হচ্ছে গেলাম দেখতে কিন্তু সেখানেও নিস্তার নেই এক দাদুর বয়সী মানুষ
ভিড়ের মাঝে শরীরে খারাপ ভাবে হাত দিতে লাগলো। দৌড়ে পালালাম সেখান থেকে।
‌বছর তিনেক পর দীপক কাকা র সাথে কোনো কারণে বাবার কথা কাটাকাটি হলো বাবা ওকে
বাড়িতে আসতে নিষেধ করলেন। শান্তি পেলাম আমি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানালাম সেই
মূহূর্তে ভুলে গেলাম আমার ভোলে বাবা ও একজন পুরুষ। এরপর থেকে সবসময় দূরে দূরে
থাকতাম ছেলেদের থেকে বিশ্বাস হারিয়ে গেছিল তাদের উপর। আস্তে আস্তে বড়ো হতে
লাগলাম আমি নবম শ্রেণি উত্তীর্ণ হলাম সব বান্ধবী দের মনে তখন প্রেমের জোয়ার আর
আমার মনে তীব্র ঘৃণা।জীবনে কখনো ভাবিনি আমার জীবনে প্রেম আসবে কিন্তু আমার
জীবনেও প্রেম এলো অপ্রত্যাশিত ভাবে।দশম শ্রেণী তখন,প্রচুর চাপ নিয়ম মাফিক
গল্পের বই পড়া বন্ধ,মায়ের হাতে কাজ ও বন্ধ শুধু পড়া আর পড়া,এটা জীবনের
প্রথম বড়ো পরীক্ষা যে,ভালো রেজাল্ট করতে ই হবে আমাকে।একটা কোচিং সেন্টারে
পড়তাম তখন সেখানেই পেলাম প্রথম প্রেমের প্রস্তাব।না বললাম জোরের সাথে।নিজের
পড়াশোনা নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পড়লাম।

‌ কিন্তু সে এতো সহজে এটা মেনে নেওয়ার ছেলে নয়।নানা ভাবে জোর করতে লাগলো
আমায় শেষে আত্মহত্যা র সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলো, ভয় পেলাম আমি মেনে নিতে
থাকলাম সব আস্তে আস্তে সেই চরম ঘৃন্য পুরুষ জাতির সদস্য তাকে প্রথম বার মন
দিলাম ভালোবেসে ফেললাম তাকে। একটা বছর কাটলো দূরের স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে
ভর্তি হলাম আমি। থাকতে শুরু করলাম সেখানকার হোস্টেলে।দেখা নেই কথা নেই কিন্তু
তাকেই ভালোবেসে গেলাম আমি।দু বছরে কিছু ছেলে বন্ধুও হলো আস্তে আস্তে ছেলেদের
প্রতি ভীতি কমতে থাকলো আমার।কেউ কেউ হয়ে গেলো খুব কাছের বন্ধুও।দুটো বছর কাটলো
উচ্চমাধ্যমিক দিলাম উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হলাম শহরের নামী একটা কলেজে। পড়াশোনা
চালাতে যা খরচ হোস্টেলের খরচ চালানো বাবার পক্ষে সম্ভব হলো না।তাই রোজ যেতাম
শহরের কলেজে ট্রেনে চড়ে।খবর পেলাম আমার প্রেমিক ফেল করে গেছে
উচ্চমাধ্যমিকে।শান্তনা দিলাম বললাম আবার পড়তে।আমি ভালো করেই জানতাম বাড়ি থেকে
সম্পর্ক টা মানবে না।তাও চেষ্টা করলাম যাতে দুজনে চাকরি করে মানিয়ে নেওয়ার।ওর
অনেক দোষ ছিল কিন্তু ভালোবেসে সব মেনে নিয়েছিলাম আমি কিন্তু হঠাৎ সব শেষ তখন
আমি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্রী এক পরিচিত বন্ধু মুখে জানলাম শুধু আমি নয় আমার মতো
এরকম আরো অনেকেই তার প্রেমিকা। বুঝলাম এ জীবনে প্রেমিকা সত্ত্বা টা আর আমার
পাওয়া হলো না।

বড়দের জন্য গল্প

‌তারপর সময় কাটলো তৃতীয় বর্ষের পড়াশোনা চলছে জোর কদমে, হঠাৎ কলেজের এক দাদা
প্রপোজাল দিলো দু তিনমাস কথা বললাম বুঝলাম আর কাউকে ভালোবাসা বা চাওয়া সম্ভব
নয় আমার।একজন ভালো বন্ধু ছিল হঠাৎ লক্ষ্য করলাম সে আরো কিছু পেতে চাইছে
বন্ধুত্ব ছাড়াও।দূরত্ব তৈরি করলাম বন্ধুত্ব শেষ করলাম তার সাথে।বি এস সি
কমপ্লিট হতেই পাড়ার লোক নানা ভাবে বাবাকে কথা শোনাতে শুরু করলো যে আর বেশি
বয়স হলে বিয়ে হবে না আর।তারাই সম্বন্ধ দেখতে শুরু করলো আমার আত্মীয় স্বজনও
যোগ দিলো সাথে।এম এস সি তে ভর্তি হলাম কারন বি এড পড়ানোর ক্ষমতা বাবা র ছিল না
আর ভাইয়ের ও পড়ার খরচ অনেক ছিল। শুরু হলো সেজেগুজে মিষ্টি র প্লেট সাজিয়ে
বসা।কিছু দিনের মধ্যেই পছন্দ করলেন একজন,যিনি একজন বেসরকারি সংস্থা তে কর্মরত
ছিলেন। পড়াশোনা হলো না আর আমার।বিয়ে হলো নিয়মরিতি মেনে বছর ঘুরতেই পরিবর্তন
এলো মা হতে চললাম আমি আর পরিবর্তন এলো আমার স্বামীরও। কিছু দিন পর জানলাম উনি
নতুন এক সংসার পাততে চলেছেন।ডিভোর্স চাইলেন কোনো কারণ ছাড়াই। অসহায় তখন আমি
ওই অবস্থাতেই ফিরে গেলাম নিজের বাড়িতে।কিছু দিন পর আমার মেয়ে তৃনা এলো আমার
কোলে।ওকে বড়ো করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে একটা কাজ জোটালাম বেসরকারি সংস্থা
তে। সারাদিনের ক্লান্তিতে সন্ধ্যায় ফিরে ওকে পড়তে বসাতাম আর সবসময় বলতাম ওই
পুরুষ জাতিকে সহজে বিশ্বাস না করতে।কিছু বছর পর অনেক চেষ্টা তে একটা ছোট
ফ্ল্যাট কিনলাম আর মেয়েকে নিয়ে শুরু হলো মা মেয়ের নতুন জীবন।

‌সময় চললো পাক ধরলো আমার চুলে। মাঝরাতে মেয়ের ঘর থেকে ফিসফিসানি শুনি
ফোনে।ভয় হয় মনে। মেয়ে এখন ইউনিভার্সিটি তে পড়ে একদিন বললো ভালোবাসে কলেজের
সিনিয়র কে।মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না আমার মেনে নিলাম।আর ঠাকুরের কাছে
প্রার্থনা করতে থাকলাম দিনরাত।আমি পারিনি সুখী হতে কিন্তু আমার মেয়ে পেরেছে
সুখী হতে খুব ভালো লাগে আমার ভাবতে। মেয়েকে বিয়ে দিলাম।বিয়ের কিছু বছর পর
মেয়ে জামাই বিদেশ চলে গেলো আমি পড়ে রইলাম একা এরিমধ্যে বাবা মা ও স্বর্গলাভ
করেছেন।ভাইয়ের বয়স হয়েছে ছেলেদের উপর নির্ভরশীল। আমি চাকরি ছেড়েছি দু’বছর
হলো, শরীর টানে না আর যে।টিউশনি করে একটা পেট কোনোরকমে চলে যায় আর নেশা বলতে
পাশের লাইব্রেরী।
‌কিছুদিন হল আলাপ হলো রিটায়ার্ড এই বয়স্ক ভদ্রলোকের সাথে।বেশ হাসিখুশি একজন
মানুষ।আগে তিনি ছিলেন একজন কলেজ শিক্ষক।ওনার সাথে কথা বললে বেশ ভালো লাগে।নাম
আশুতোষ ঘোষ।বাড়িতে ভালো রান্না হলে নিয়ে যাই ভদ্রলোক খেতে বড়োই ভালোবাসেন।
ছয়মাস পর ভদ্রলোক এক অদ্ভুত প্রস্তাব দিলেন একসাথে থাকার। ভদ্রলোক অবিবাহিত
ছিলেন আর আমার একাকীত্ব কে ভাগ করার কেউ ছিলো না বহুদিন হয়ে গেছিল মেয়ের খোঁজ
পাইনি। রাজি হইনি আমি ওনার প্রস্তাবে এইভেবে যে সমাজ মেনে নেবে না এটা। চিন্তা
ভাবনা করে হঠাৎ একদিন অসুস্থ হয়ে পড়ি আমি সেইসময় একটা মানুষ ই আমার সেবা করে
সুস্থ করেন আমাকে। নিজের কেউ খোঁজ রাখেনি আমার।না আর আমি সমাজের বাধা মানিনি
চলে এসেছিলাম ওই মানুষ টার কাছে।আজ আমরা দু’জন খুব সুখী।একে অপরের সুখ দুঃখ ভাগ
করে নিয়েছি আমরা। না আমি পারমিতা জীবনের শেষ সময়ে এসে প্রকৃত সুখী হয়েছি আর
সেটা একটা পুরুষের কারণেই।
সমাপ্ত

Share This Article