Bangla Romantic Kobita (রোমান্টিক কবিতা) | Love Poems

Bongconnection Original Published
10 Min Read


 Bangla Romantic Kobita (রোমান্টিক কবিতা) | Love Poems

Bangla Romantic Kobita (রোমান্টিক কবিতা) | Love Poems
Loading...


মেঘবালিকার জন্য রূপকথা
          – জয় গোস্বামী
 আমি যখন ছোট ছিলাম
 খেলতে যেতাম মেঘের দলে
 একদিন এক মেঘবালিকা
 প্রশ্ন করলো কৌতুহলে
 “এই ছেলেটা,
 . নাম কি রে তোর?”
 আমি বললাম,
 . “ফুসমন্তর !”
 মেঘবালিকা রেগেই আগুন,
 “মিথ্যে কথা । নাম কি অমন
 হয় কখনো ?”
 . আমি বললাম,
 “নিশ্চয়ই হয় । আগে আমার
 গল্প শোনো ।”
 সে বলল, “শুনবো না যা-
 সেই তো রাণী, সেই তো রাজা
 সেই তো একই ঢাল তলোয়ার
 সেই তো একই রাজার কুমার
 পক্ষিরাজে
 শুনবো না আর ।
 . ওসব বাজে ।”
 আমি বললাম, “তোমার জন্য
 নতুন ক’রে লিখব তবে ।”
 সে বলল, “সত্যি লিখবি ?
 বেশ তাহলে
 মস্ত করে লিখতে হবে।
 মনে থাকবে ?
 লিখেই কিন্তু আমায় দিবি ।”
 আমি বললাম, “তোমার জন্য
 লিখতে পারি এক পৃথিবী ।”
 লিখতে লিখতে লেখা যখন
 সবে মাত্র দু-চার পাতা
 হঠাৎ তখন ভুত চাপল
 আমার মাথায়-
 
 খুঁজতে খুঁজতে চলে গেলাম
 ছোটবেলার মেঘের মাঠে
 গিয়েই দেখি, চেনা মুখ তো
 একটিও নেই এ-তল্লাটে
 
 একজনকে মনে হল
 ওরই মধ্যে অন্যরকম
 এগিয়ে গিয়ে বলি তাকেই !
 “তুমি কি সেই ? মেঘবালিকা
 তুমি কি সেই ?”
 

 সে বলেছে, “মনে তো নেই
 আমার ওসব মনে তো নেই ।”
 আমি বললাম, “তুমি আমায়
 লেখার কথা বলেছিলে-”
 সে বলল, “সঙ্গে আছে ?
 ভাসিয়ে দাও গাঁয়ের ঝিলে !
 
 আর হ্যাঁ, শোন-এখন আমি
 মেঘ নই আর, সবাই এখন
 বৃষ্টি বলে ডাকে আমায় ।”
 বলেই হঠাৎ এক পশলায়-
 চুল থেকে নখ- আমায় পুরো
 ভিজিয়ে দিয়ে-
 . অন্য অন্য
 বৃষ্টি বাদল সঙ্গে নিয়ে
 মিলিয়ে গেল খরস্রোতায়
 মিলিয়ে গেল দূরে কোথায়
 দূরে দূরে…।
 
 “বৃষ্টি বলে ডাকে আমায়
 বৃষ্টি বলে ডাকে আমায়-”
 আপন মনে বলতে বলতে
 আমিই কেবল বসে রইলাম
 ভিজে একশা কাপড়জামায়
 গাছের তলায়
 . বসে রইলাম
 বৃষ্টি নাকি মেঘের জন্য
 
 এমন সময়
 অন্য একটি বৃষ্টি আমায়
 চিনতে পেরে বলল, “তাতে
 মন খারাপের কি হয়েছে !
 যাও ফিরে যাও-লেখ আবার ।
 এখন পুরো বর্ষা চলছে
 তাই আমরা সবাই এখন
 নানান দেশে ভীষণ ব্যস্ত
 তুমিও যাও, মন দাও গে
 তোমার কাজে-
 বর্ষা থেকে ফিরে আমরা
 নিজেই যাব তোমার কাছে ।”
 এক পৃথিবী লিখবো আমি
 এক পৃথিবী লিখবো বলে
 ঘর ছেড়ে সেই বেড়িয়ে গেলাম
 ঘর ছেড়ে সেই ঘর বাঁধলাম
 গহন বনে
 সঙ্গী শুধু কাগজ কলম
 
 একাই থাকব । একাই দুটো
 ফুটিয়ে খাব—
 দু এক মুঠো
 ধুলো বালি-যখন যারা
 আসবে মনে
 তাদের লিখব
 লিখেই যাব !
 
 এক পৃথিবীর একশোরকম
 স্বপ্ন দেখার
 সাধ্য থাকবে যে-রূপকথার—
 সে রূপকথা আমার একার ।
 
 ঘাড় গুঁজে দিন
 লিখতে লিখতে
 ঘাড় গুঁজে রাত
 লিখতে লিখতে
 মুছেছে দিন—মুছেছে রাত
 যখন আমার লেখবার হাত
 অসাড় হল,
 মনে পড়ল
 সাল কি তারিখ, বছর কি মাস
 সেসব হিসেব
 আর ধরিনি
 লেখার দিকে তাকিয়ে দেখি
 এক পৃথিবী লিখব বলে
 একটা খাতাও
 শেষ করিনি ।
 
 সঙ্গে সঙ্গে ঝমঝমিয়ে
 বৃষ্টি এল খাতার উপর
 আজীবনের লেখার উপর
 বৃষ্টি এল এই অরণ্যে
 বাইরে তখন গাছের নিচে
 নাচছে ময়ূর আনন্দিত
 এ-গাছ ও-গাছ উড়ছে পাখি
 বলছে পাখি, “এই অরণ্যে
 কবির জন্যে আমরা থাকি ।”
 বলছে ওরা, “কবির জন্য
 আমরা কোথাও আমরা কোথাও
 আমরা কোথাও হার মানিনি—”
 
 কবি তখন কুটির থেকে
 তাকিয়ে আছে অনেক দূরে
 বনের পরে, মাঠের পরে
 নদীর পরে
 সেই যেখানে সারাজীবন
 বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে,
 সেই যেখানে কেউ যায়নি
 কেউ যায় না কোনদিনই—
 
 আজ সে কবি দেখতে পাচ্ছে
 সেই দেশে সেই ঝরনাতলায়
 এদিক-ওদিক ছুটে বেড়ায়
 সোনায় মোড়া মেঘহরিণী—
 কিশোর বেলার সেই হরিণী ।

Bangla Romantic Kobita Lyrics

Loading...
    কথা আছে 
       – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
 বহুক্ষণ মুখোমুখি চুপচাপ,
 একবার চোখ তুলে সেতু
 আবার আলাদা দৃষ্টি,
 টেবিলে রয়েছে শুয়ে
 পুরোনো পত্রিকা
 প্যান্টের নিচে চটি,
 ওপাশে শাড়ির পাড়ে
 দুটি পা-ই ঢাকা
 এপাশে বোতাম খোলা বুক,
 একদিন না-কামানো দাড়ি ওপাশে এলো খোঁপা,
 ব্লাউজের নীচে কিছু
 মসৃণ নগ্নতা
 বাইরে পায়ের শব্দ, 
 দূরে কাছে কারা যায়
 কারা ফিরে আসে
 বাতাস আসেনি আজ,
 রোদ গেছে বিদেশ ভ্রমণে। 
 আপাতত প্রকৃতির অনুকারী ওরা দুই মানুষ-মানুষী
 দু‘খানি চেয়ারে স্তব্ধ, 
 একজন জ্বলে সিগারেট
 অন্যজন ঠোঁটে থেকে হাসিটুকু মুছেও মোছে না
 আঙুলে চিকচিকে আংটি, 
 চুলের কিনারে একটু ঘুম
 ফের চোখ তুলে কিছু স্তব্ধতার বিনিময়,
 
 সময় ভিখারী হয়ে ঘোরে
 অথচ সময়ই জানে,
 কথা আছে, ঢের কথা আছে।

নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে 
 রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 
 নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে
 রয়েছ নয়নে নয়নে,
 হৃদয় তোমারে পায় না জানিতে
 হৃদয়ে রয়েছ গোপনে।
 
 বাসনা বসে মন অবিরত,
 ধায় দশ দিশে পাগলের মতো।
 স্থির আঁখি তুমি ক্ষরণে শতত
 জাগিছ শয়নে স্বপনে।
 
 সবাই ছেড়েছে নাই যার কেহ
 তুমি আছ তার আছে তব কেহ
 নিরাশ্রয় জন পথ যার যেও
 সেও আছে তব ভবনে।
 
 তুমি ছাড়া কেহ সাথি নাই আর
 সমুখে অনন্ত জীবন বিস্তার,
 কাল পারাপার করিতেছ পার
 কেহ নাহি জানে কেমনে।
 
 জানি শুধু তুমি আছ তাই আছি
 তুমি প্রাণময় তাই আমি বাঁচি,
 যতো পাই তোমায় আরো ততো যাচি
 যতো জানি ততো জানি নে।
 
 জানি আমি তোমায় পাবো নিরন্তন
 লোক লোকান্তরে যুগ যুগান্তর
 তুমি আর আমি, মাঝে কেহ নাই
 কোনো বাঁধা নাই ভুবনে।
 
 নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে
 রয়েছ নয়নে নয়নে।

Romantic Bangla Kobita pdf

    এলোমেলো প্রেম
         – মাহ্ফুজ রাজন
 
 আকাঙ্ক্ষার ঝুল বারান্দায়
 যখন দেখা হয় রোজ,
 মেয়েটি হয়ে যায় কিশোরী
 আর ছেলেটি
 চল্লিশ বছরের কিশোর।
 
 আমার চেয়ে ভালো
 তোমায় আর
 কে চেনে বলো ?
 আকাশ যেমন করে
 চেনে তার নীল,
 চাঁদ তার জ্যোস্নাকে,
 তেমনিভাবে জানি আমি
 মেঘকন্যা তোমাকে ।।
 
 তিন বছর পর
 হঠাৎ মুখে এলাচের গন্ধ।
 কেন বলোতো ?
 তিন বছর পূর্বে
 এমন দিনে,ঠিক এমনই মুহূর্তে
 কেশনিশি অন্ধকারে
 তোমার মুখের ক্ষত-বিক্ষত
 আহত এলাচ দানারা
 আমাকেও যে ছুঁয়েছিল !
 তুমি সেই অলৌকিক মেয়ে,
 যার গভীর কালো
 দিঘিতে ফোটে জলপদ্ম,
 হাসিতে জন্ম নেয়
 পবিত্র জোনাক।
 যার প্রেমে মন্ত্র মুগ্ধ আমি
 চেয়ে থাকি অপলকপ
 চোখের তারায়, ইচ্ছে হয়
 পুনর্বার জন্মাই।
 যাকে দেখলে ছুঁতে মন চায়না
 ভেঙ্গে যাবে বলে।
 ইচ্ছে হয় কেবল
 কবিতা আর গান শুনিয়েই
 মুখোমুখি কাটিয়ে দেই
 একটি জীবন।।
 আমার জন্য হাসো তুমি
 আমার জন্যই মনখারাপ,
 পদ্মপাতায় জল টলমল
 প্রেমের জন্য বিসংবাদ।।
 মাঝেমাঝে মনে হয়
 ভীষণ দূরারোগ্য ব্যাধিতে
 ছিঁড়ে খুঁড়ে ফেলুক আমাকে।
 তবু যদি পাই তোমার স্পর্শ
 তবু যদি সবসময় ছুঁয়ে ছুঁয়ে থাকা,
 অর্থাৎ তোমার এতোটুকু স্পর্শের প্রতিক্ষায়
 আমার মৃত্যু আকাঙ্ক্ষা।।
 ঘুমের ঘোরে হঠাৎ
 পরিচিত গন্ধ নাকে আসতেই
 তড়িঘড়ি উঠে বসলাম,
 চারদিক চাইলাম,কেউ নেই।
 বুঝলাম, ও কিছু নয়,
 ওটা একটা নারীর গন্ধ,
 বহুদিন আগে যে
 আমার ঘর ছেড়ে হারিয়েছে
 দূরে কোথাও।



Bangla Romantic Kobita Image

    যে আমাকে প্রেম শেখালো
         – মাকিদ হায়দার
 যে আমাকে প্রেম শেখালো
 জোৎস্না রাতে ফুলের বনে
 সে যেন আজ সুখেই থাকে
 সে যেন আজ রানীর মত
 ব্যক্তিগত রাজ্যপাটে
 পা ছড়িয়ে সবার কাছে বসতে পারে
 বলতে পারে মনের কথা
 চোখের তারায়
 হাত ইশারায়
 ঐ যে দেখ দুঃখি প্রেমিক
 যাচ্ছে পুড়ে রোদের ভিতর
 ভিক্ষে দিলে ভিক্ষে নেবে
 ছিন্ন বাসে শীর্ন দেহে
 যাচ্ছে পুড়ে রোদের ভিতর
 কিন্তু শোন প্রজাবৃন্দ
 দুঃসময়ে সেই তো ছিলো
 বুকের কাছে হৃদয় মাঝে
 আজকে তারে দেখলে শুধু ইচ্ছে করে
 চোখের পাতায় অধর রাখি
 
 যে আমাকে প্রেম শেখালো
 প্রেম শিখিয়ে চিনিয়েছিলো
 দুষ্টু গ্রহ অরুন্ধতী
 বৃষ্টি ভেজা চতুর্দশী
 জোৎস্না রাতের উজ্জ্বলতা
 ভোরের বকুল শুভ্র মালা
 নগর নাগর ভদ্র ইতর রাজার বাড়ি
 সেই তো আবার বুঝিয়েছিলো
 যাওগো চলে আমায় ছেড়ে
 যে আমাকে প্রেম শেখালো
 জোৎস্না রাতে ফুলের বনে
 সে যেন আজ সুখেই থাকে
 
 নিজের দেহে আগুন জ্বেলে ভেবেছিলাম
 নিখাদ সোনা হবোই আমি
 শীত বিকেলের টুকরো স্মৃতি
 রাখবো ধরে সবার মত
 হৃদয় বীণার মোহন তারে ভুলেই গেলাম
 যখন তুমি আমায় ডেকে বললে শুধু
 পথের এখন অনেক বাকি
 যাও গো শোভন
 যাও গো চলে বহুদুরে
 কণ্ঠে আমার অনেক তৃষা
 যাও গো চলে আপন পথে
 


 এই না বলেই
 হাসলে শুধু করুন ঠোঁটে
 বাজলো দুরে শঙ্খ নিনাদ
 কাঁদলো আমার বুকের পাথর
 কাঁদলো দুরে হাজার তারা
 একলা থাকার গভীর রাতে
 একলা জাগার তিন প্রহরে
 তাইতো বলি সবার কাছে
 যে আমাকে দুঃখ দিলো
 সে যেন আজ সবার চেয়ে সুখেই থাকে
 যে আমাকে প্রেম শেখালো
 প্রেম শিখিয়ে বুকের মাঝে অনল দিলো
 সে যেন আজ সবার চেয়ে
 সুখেই থাকে, সুখেই থাকে

আরো পড়ুন, Premer Kobita Bangla

Share This Article