হাসির গল্প – তিনভূত (Hasir Golpo)Bengali Story

Bongconnection Original Published
5 Min Read


 হাসির গল্প – তিনভূত (Hasir Golpo)Bengali Story

হাসির গল্প - তিনভূত
Loading...

তিনভূত 
– সুমন 
এটি একটি হাসির ভুত এর গল্প, পাঠক দের কাছে আমার অনুরোধ এটিকে হাসির গল্প ভেবেই
পড়বেন ভয়ের নয়।

বাংলার হাসির গল্প

Loading...

       গুপি, পাঁচু ও হরি এই তিন ভুতের ইদানিং বড় সমস্যা
দেখা দিয়েছে, তাদের কে নাকি আর কোন মানুষ তেমন আগের মতো ভয় পায়না। আজকাল এই
আধুনিক সমাজে ভুতেরাই নাকি মানুষ কে ভয় পেয়ে চলে। তাই এর একটা বিহিত করার
জন্যে বামুন দের পুকুর ঘাটে তাদের আলোচনা সভা বসেছে। গুপি বলল নাঃ নাঃ এখানে আর
থাকা যাবেনা দেখছি ভুত বলে কি আমাদের কোন সন্মান নেই? পাঁচু বলল কেন ভায়া
তোমার আবার কি হল? গুপি বলল আর বোলোনা ভায়া, সেদিন সন্ধে বেলা বামুন এর মেয়েটা
উঠুন এ বসে ছিল ভাবলাম একটু ভয় দেখিয়ে দেই, ওমনি আমার পেছনে কুকুর লেলিয়ে
দিলো… সাহস কতো ভাব? ভুত বলে আমাকে কোন পাত্তাই দিলনা গা… বলি ওদের কি একটু
দয়া মায়াও নেই আমাদের ওপর? পাঁচু বলল তারপর কি কোরলে? গুপি বলল আর কি করি
কোনরকমে প্রাণ নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে এলাম। হরি পাশ থেকে বললো ঠিক বলেছিস বেটারা
আমাদের জীবন অতিষ্ট করে তুলেছে, মাঝে মাঝে মনে হয় গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে পড়ি ওদের
জ্বালায়। পাঁচু বলল কেন রে তোকেও কি কুকুর লেলিয়ে তাড়া করেছে নাকি? হরি বলল
না না, সেদিন কবিরেজ দের বাগানের নিম গাছ টায় বসে বাগতি পাড়ার শাকচুন্নির
সঙ্গে বসে পিরিত করছিলাম হঠাৎ কবরেজ মশাইের ছেলেটা পাখি মারবে বলে এমন গুলতি
ছুঁড়ল সোজা আমার তলপেটে এসে লাগল। সে কি যন্ত্রনা, তিনদিন ছটফট করেছি যন্ত্রনা
তে। পাঁচু বলল আমাকে ও কি কম জ্বালিয়েছে বেটারা। আমি তো বুড়ো শিব তলার পেছনে
শিমুল গাছে থাকতাম, রোজ সন্ধে বেলায় শিমুল গাছে পা দুলিয়ে দুলিয়ে বসে গান
গাইতাম আর রাস্তা দিয়ে লোক গেলে দুই একটাকে ভয় দেখতাম। হঠাৎ একদিন পাড়ার
ছোঁড়ারা তার নিচে মাচা বাধলো বসার জন্যে । বেশ কিছুদিন কোন গন্ডগোল হলোনা,
তারপর একদিন দেখি ছোঁড়ারা রাতে বসে মধ খেয়ে কিসব বাজে ভাষায় গালাগাল দিচ্ছে
গো, ছিঃ ছিঃ ছিঃ আমার তো শুনেই গা রি রি করে উঠলো। একটু কি কান পাতার জো আছে??
সেখান থেকেন সরে পড়েলুম, গিয়ে পুকুর ধারে জাম গাছে বাসা বাধলুম। কিন্তু
সেখানে এমন কাঠপিঁপড়ে কামড়াতে শুরু করলো বাধ্য হয়ে পালুয়ে এলুম। তিনজন
তিনজনের কাহিনী শেষ করে গালে হাত দিয়ে ভাবতে লাগলো কি কোরলে তারা তাদের
মর্যাদা, সন্মান ফিরে পাবে?? কারণ ভূত সমাজে তাদের এসব কথা শুনলে সেখানেও তাদের
জায়গা হবেনা। তারা ঠিক করলো  একটা শেষ চেষ্টা করে দেখবে তাদের এই কলঙ্ক
মেটানোর।

বাচ্চাদের হাসির গল্প

 পরের দিন সন্ধ্যায় তারা গ্রামে গিয়ে এমন কিছু মানুষ খুঁজতে লাগলো যারা
একটু ভীতু স্বভাব এর যাদের অনাসেই ভয় পাইয়ে দেওয়া যায়। তারা পরামর্শ করলো
প্রথমে মানুষ এর বেষে যাবে তারপর যখনি কোন মানুষ দেখতে পাবে ওমনি তার সামনে
ভয়ংকর রুপে বদলে যাবে। তারা দেখলো দুরে বামুন বুড়ি মাঠ থেকে গোবর গুড়িয়ে
ঘরে ফিরছে, তারা ভাবলো এই সুজোগ, তৎখনাত তারা মানুষের বেষে নিজেদের পরিবর্তন
করে নিয়ে বামুন বুড়ির দিকে এগিয়ে গেল। যেই বামুন বুড়ি সামনে এল ওমনি তারাও
তাদের ভয়ংকর রুপ নিয়ে তার সামনে আচমকা উপস্থিত হলো। কিন্তু তারা যেটা ভেবে
গিয়েছিলো হলো ঠিক তার উল্টো টা, বামুন বুড়ি ওদের দেখে ভয় পাওয়া তো দূরের কথা,
প্রচন্ড রেগে দাঁত কিড়মিড়িয়ে বলল তবে রে মিনসের দল আমায় ভয় দেখানো? বলে
বালতি থেকে গোবর তুলে ছুঁড়ে মারলো তাদের দিকে, তারপর ঝঁটা নিয়ে তেড়ে গেল
তাদের দিকে। 



 Also read, রোমান্টিক হাসির গল্প

                     
                     
                     
                     
                     
                     
                     
  বুঝতেই পারছেন আপনারা এরপর গুপি, পাঁচু আর হরির কি অবস্থা মনের? তারা
ভয়ে আর্তনাদ করে তিনজন তিনদিকে ছিটকে পড়লো, গুপি গিয়ে পড়ল পাশের পচা ডবা তে,
পাঁচু মাঠে গড়াগড়ি খেতে লাগল আর হরি ভয়ে সোজা তালগাছে উঠে গেল।
বলাই বাহুল্য এরপর তারা আর সেই গ্রামে থাকেনি, মানুষ কে ভয় দেখানোর সাধ তাদের
চিরতরে ঘুচে গেছে। প্রাণ নিয়ে যে ফিরে আসতে পেরেছে এটাই তাদের কাছে অনেক বড়
ব্যাপার।

প্রিয় গল্প পড়তে নিয়মিত ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইটে। 
ভালো থাকুন, ভালোবাসায় থাকুন। .. Thank You, Visit Again…

Share This Article