চরিত্রহীন – Charitraheen – Download Charitraheen Story – Bengali Romantic Premer Golpo – Golpo Bangla

Bongconnection Original Published
6 Min Read



চরিত্রহীন - Charitraheen - Download Charitraheen Story - Bengali Romantic Premer Golpo - Golpo Bangla
Loading...
Charitraheen 






রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে নীলাশা। মেয়েদের পড়াশোনা নিয়ে আগ্রহী হলেও বাইরে গিয়ে পড়াশোনা করবে সেটা ঠিক মতো মেনে নিতে পারে না নীলাশার পরিবার। নীলাশা অনেক বুঝিয়ে রাজী করাল, তবে বাড়ির বড়দের আদেশ হলো _বাইরে পড়তে যাচ্ছ যাও, তবে পড়াটাই করো। যা এখন যুগ পরেছে, ও সব প্রেম ভালোবাসায় আবার পড়না। তবে কিন্তু এ বাড়ির দরজা বন্ধ হয়ে যাবে তোমার জন্য। নীলাশা বড়দের আদেশ মাথা পেতেনিল।

পড়ার জন্য চলে এলো বাইরের জগতে। কলেজে ক্লাস শুরু, রীতিমত পড়া শোনা নিয়ে থাকে। তবে কলেজে কাউকে যে একেবারে ভালো লাগেনী এমন নয়, ভালো লাগা মনের মধ্যে রেখেছিল, বাইরে আসতে দেয়নি কখন পরিবারের কথা ভেবে।

কলেজ শেষ, চাকরীর পরীক্ষা দিয়ে একটা চাকরী ও পেয়ে গেল। পড়াশোনায় চিরদিন ভালো ছিল নীলাশা। বড়রা বললেন _এবার বিয়েটা করে নাও। আমরা তোমার জন্য ছেলে দেখছি। নীলাশা সম্মতি দিল বিয়ের জন্য।

এক সরকারী চাকুরিরত পাত্রের সাথে বিয়ে ঠিক হলো। নীলাশা ভাবল এবার বরের সাথে জুটিয়ে প্রেম করবো। আর তো বারন নেই বড়দের। হলো তাই, নীলাশার মনের মতো সুজয়। খুব রোমান্টিক মনের মানুষ সে। এত সুন্দর গুছিয়ে কথা বলে ।অফুরন্ত কথার শেষ নাই। বিয়ে ঠিক হবার পর সারাদিন কাজের ফাঁকে ফাঁকে তাদের প্রেম চলতে লাগল।






বিয়ে হয়ে চলে এলো সুজয়ের বাড়িতে। বিয়ের প্রথম প্রথম স্বপ্নে বিচরন ছিল নীলাশার। কিন্তু ধীরে ধীরে তার স্বপ্ন ভাঙতে শুরু করল। সুজয়ের আমুল পরিবর্তন দেখে। যে সুজয় তাকে এত ভালোবাসাত, এত সম্মান করতো সেই এখন প্রতি মুহূর্তে অপমানিত করে, লাঞ্ছিত করে মাঝে মাঝে  গায়ে হাত ও তুলতে বাঁধে না সুজয়ের। এ অপমানের কথা কাকে বলবে সে, লজ্জায় নত হয়ে যায়  সে। বাড়িতে বলেছিল একবার _বড়রা বললেন _সংসারে ওমন একটু আধটু হয়ে থাকে মানিয়ে নিয়ে চলতে হয়। নীলাশা আর কোনদিন কিছু বলেনি অভিমানে। সব অপমান, লাঞ্ছনা নীরবে সহ্য করে গেছে সংসার বাঁচানোর তাগিদে।

বছর এর পর বছর পাড় হয়ে গেল। নীলাশা বড় ক্লান্ত হয়ে পরেছে এই ভালো থাকার অভিনয় করতে করতে। মনে বিশ্বাস সুজয় আবার আগের মতো হয়ে যাবে, কিন্তু তা আর হয়নি। বিয়ের আগের সুজয় অভিনেতা ছিল, বর্তমান সুজয়ের আসল রূপ।

নীলাশার অফিসে নতুন জয়েন করে রুদ্রজিৎ সেন। বেশ স্মার্ট, সীমিত ভাষী, সব কাজ সুন্দর করে। আলাপ হয় দুজনের। বেশ ভালো বন্ধুত্বের সম্পর্কে  আবদ্ধ তারা।বাড়ির কথা,  মনের কথা সব আলোচনা হয় তাদের।

নীলাশাকে যথেষ্ট সম্মান করতো রুদ্র। সুজয়ের ব্যবহারে মাঝে নামে ক্ষুব্ধ হয়, নীলাশা বলে _ও আমার স্বামী, ও যেমন আমি তাতে খুশি  বলে চুপ করে যায়। কে বা বলতে চাই নিজের অপমানের কথা, যেটা পারতো গোপন করে রাখত স্বামীর দেওয়া অপমান গুলো।

__তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি নীলাশা।
__তা কি করে হয়? আমি বিবাহিতা। অসম্ভব বলে বেড়িয়ে যায়  নীলাশা।
__সুজয় তোমাকে ভালোবাসে না, এত অপমান করে তোমার গায়ে হাত তোলে  তবু তুমি ও কে ভালো বাসবে। আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি।
__ধীরে ধীরে নীলাশা ও রুদ্রকে ভালোবেসে ফেলে। সুজয়কে ডিভোর্স দেবে ঠিক করল।

কোন একনির্জন দুপুরে রুদ্র নীলাশা এক অন্তরঙ্গ মুহুর্ত কাটায়। একে অপরকে উজাড় করে সঁপে দিল। ভালোবাসার স্রোতে ভেসে গেল দুটি হৃদয়।

সেদিনের ঘটনার পর নীলাশার মনে এক খারাপ লাগা তৈরি হয়। এক বছর সে যে কাজ করার কথা চিন্তা করেনি সে কি করে করলএমন কাজ। সে কি তবে তার চরিত্র খোয়াল।
রুদ্র আশ্বাস দিয়ে বলে _ভুল তো কিছু হয় নি। আমরা একেঅপরকে ভালোবাসি, আর তোমার ডিভোর্স টা হয়ে গেলে বিয়ে ও করব তোমাকেই।




নীলাশা কিছু টা আশ্বাস পায়। কিন্তু এর কিছু দিন পর থেকে লক্ষ্য করলো নীলাশা রুদ্র কেমন যেন বদলে গেছে। বাড়িতে সুজয়ের খারাপ ব্যবহার আর অন্যদিকে রুদ্রের পরিবর্তন সব মিলিয়ে চরম হতাশার স্বীকার হতে লাগল সে।

__রুদ্র তুমি আমাকে এ ভাবে এড়িয়ে যাচ্ছ কেন আজ কাল?
__তোমাকে বলা হয়নি নীলাশা, আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। আশীর্বাদ পর্ব ও শেষ। আমি এখন আমার সুন্দরী হবু  বউকে নিয়ে ব্যস্ত। তাই আর তোমার সাথে কথা বলার সময় পাই না।
__তবে তুমি যে বলেছিলে আমার ডিভোর্স হয়ে গেলে, আমরা বিয়ে করব।
__দুর বিয়ে আর তোমাকে,,,,,?? বলে হাসতে লাগল, শোন নীলাশা তোমাকে আনি কোনদিন ভালোবাসিনি, যে টা বলেছিলাম তোমার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে একটু তোমার শরীরটা ভোগ করলাম মাত্র। তুমি চরিত্রহীনা নারী বলে ফোনে হবু বউ এর সাথে প্রেমালাপ করতে করতে বেরিয়ে গেল ।
__নীলাশা চোখের সামনে অন্ধকার দেখতে লাগল। সে কি করে এক বড় ভুল করল মানুষ চিনতে। সবাই তার দুর্বলতার সুযোগ নিল? সুজয়, রুদ্র সবাই তো এক চরিত্রের মানুষ। তবে চরিত্রহীন কে? সুজয় যদি বছরের পর বছর এত অপমান না করে যদি একটু ভালোবাসা সম্মান দিত তাহলে তো নীলাশার  জীবনে  রুদ্র আসতো না , রুদ্র সেও ভালোবাসা সম্মানের নামে অভিনয় করে গেল। চরিত্র হীন কি শুধু মেয়েরাই হয়?? ছেলে রা হয় না??
তবে চরিত্রহীন কে?? সুজয় ?? রুদ্র  ?? না  নীলাশা  ??
সেটা নির্নয় করুন আমার পাঠক বন্ধুরা।

(সম্পূর্ণ কাল্পনিকচরিত্র)



Share This Article