জানি দেখা হবে | প্রথম পর্ব | Bangla Golpo – Bengali Story

Bongconnection Original Published
14 Min Read

জানি দেখা হবে | প্রথম পর্ব | Bangla Golpo – Bengali Story

জানি দেখা হবে | প্রথম পর্ব | Bangla Golpo - Bengali Story
Loading...

                   
                    ১

তুমি তাহলে যাবে না তো?!
নাহ্হঃ,,,,,বললাম তো! তখন থেকে  একটা কথা বারে বারে বলছি,বুঝতে কেনো
চাইছো না?!কথাটা যেনো বেশ রাগ আর আর্তনাদ মাখা সুরে বেরিয়ে এলো আদির গলা
দিয়ে। যদিও বলার ধরন টা ছিল প্রায় চিৎকার করে  বাড়ি মাথায় তোলা
প্রকৃতিরই। না।ঠিক বাড়ি নয়, শহরের মাঝামাঝি কলকাতার বুকে বিকেলের রোদ
গড়িয়ে সন্ধের চাঁদের জোছনা মাখা একটা ছোট্ট ক্যাফেতে।
স্নেহা যেনো আদির এই শেষের চিৎকার করে  বলে ওঠাটা  মেনে নিতে পারছে
না।এর আগে কখনো এমন টা হয়ছে বলে স্নেহা যেনো অতীতের কটর থেকে টেনে হিচড়ে বের
করে আনতে চাইলে ও  তার কোথাও হদিশ পাচ্ছে না। আদির ওই শেষকথা টা যেনো
স্নেহার মুখের ভাষা কেরে নিতে যথেষ্ট ছিল বলে মনে হলো ওর। প্রায় ভিতর থেকে
কেঁপে উঠেছিল ওর চিৎকারের  চোটে! শুধু ও কেনো ,,,ওখানে বসে থাকা
প্রত্যেকটা মানুষই প্রায় স্তম্ভিত ওদেরকে দেখে।আর বেশ খানিকটা আশ্চর্য ও।
স্নেহা কিছু একটা বলতে চেয়েও  বলতে পারলো না আর।শেষে টেবিলের ওপর এক
কোণে পড়ে থাকা ব্যাগটা প্রায় টেনে নিয়ে অসাবধানে উঠতে গিয়ে সজোরে ধাক্কা
খেল পায়ের করি আঙ্গুলে, টেবিলের পায়াতে। একঝটকায় মাথাটা একটু যেনো ঘুরে
গেলো। কফির কাপ টাও একটুর জন্য রক্ষা পেলো। তাও অসহ্য যন্ত্রণা নিয়েই সঙ্গে
সঙ্গে বেরিয়ে এলো ওখান থেকে।

খানিকটা খুরিয়ে খুরিয়েই হাঁটছিল ও।প্রায় টানা পনরো মিনিট ধরে ওই ভাবেই হেঁটে
যাচ্ছে। পাস কাটিয়ে যাদবপুর যাওয়ার অন্যান্য বাস গুলোর সাথে সাথে ওর পরিচিত
বাস টাও চলে গেলো। তাও উঠলো না ও। কিন্তু আর ওই ভাবে কিছুতেই হাঁটতে পারছে না
দেখে পায়ের দিকে একবার অবহেলার সঙ্গে তাকালো।করি আঙ্গুলটা পুরো ফুলে
ছোটোখাটো আলুতে পরিণত হয়েছে। আর নখের কোনা থেকে বেশ খানিকটা রক্তও বেরিয়ে
এসেছে।বোধয় নখটা উপরে গেছে। সামান্য ঝুঁকে পায়ের দিকে হাতটা বাড়াতেই যেনো
সঙ্গে সঙ্গে আরো কিছুটা ব্যাথা বেড়ে গেল। কোনক্রমে একটু এগিয়ে সামনে
রাস্তার পাশে গাছের নিচে বাঁধানো জায়গাটায় গিয়ে বসলো ও।প্রচন্ড পরিমাণে
ব্যাথা করছে।,,,,, আর সহ্য করা যাচ্ছে না।ভালো করে দেখতে পাটা আরেকটা পায়ের
ওপর তুলে দেখলো ,,,, আসতে আসতে আঙ্গুলের ধার বেয়ে গোড়ালি অব্দি প্রায় ফুলে
গেছে।যন্ত্রণাটা ও বাড়ছে।কাছে একটা জলের বোতল ও নেই যে অন্তত পায়ে জল
দেবে।মাথাটা তুলে একটু আশপাশে দিকে ঘুরে তাকাতে গিয়ে দেখলো সামনে একটা
ঘুঁপচি মতো দোকান।ঠিক কিসের দোকান বোঝা গেলো না। পান থেকে শুরু করে টুকটাক
স্টেশনারি জিনিস,সামনে কাঠের উনুনে ছোট্ট একটা হাড়িতে  চা গরম হচ্ছে ,
কিছু শুকনো খাবারও চোখে পরলো, এছাড়াও আরো কত কি। যদিও যেটা স্নেহা এই
মুহূর্তে চাইছে সেটাই ওর চোখে পরেনি এখনো অব্দি।কোনক্রমে উঠে দাঁড়িয়ে
খোরাতে খোরাতেই  দোকানটার সামনে একটা বেঞ্চে বসে থাকা দুটো বয়স্ক মতো
লোককে পেরিয়ে গিয়ে দাড়ালো দোকানটার সামনে। কাছে গিয়ে চোখে পরলো আরেকটু
ঐপাশ করে আরো কয়েকটা ছেলে আড্ডা দিচ্ছে। যাদের স্নেহা এখন লক্ষ্য করলেও ওরা
ওকে অনেকক্ষন আগেই দেখেছে।
যাইহোক অত মাথা না ঘামিয়ে আরেকবার পুরো দোকানটাতে চোখ চারিয়ে নিয়ে অল্প
বিরক্তির সাথে অথচ শান্ত গলায় স্নেহা জিজ্ঞাসা করলো দাদা জল আছে?
  লোকটা কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখিয়েই সোজা জলের বোতল টা তুলে স্নেহার
হাতে ধরিয়ে দিল। যেনো উনি আগে থেকেই জানতেন ও আসবে আর জল চাইবে। আর তাই উনি
তৈরি হয়েই ছিলেন জলের বোতল টা এগিয়ে দেওয়ার জন্য।

Premer Golpo

Loading...

                   
                    ২

ওই একই ভাবেই খোরিয়ে খোরিয়ে হেঁটে যাচ্ছে ও।কষ্ট হচ্ছে,,!হোক।এই মুহূর্তে
আদির দেওয়া কষ্টর কাছে এ কষ্ট কিছুই না।
অন্যমনস্ক হয়ে চলছিল ও। চলতে হঠাৎ করে কোথা থেকে কি হয়ে গেল,পিছন কিছু একটা
যেনো এসে ধাক্কা মারলো ওকে।আর বেশ জোরেই মারলো।সামনের দিকে মুখ থুবড়ে পড়ল
স্নেহা। আর পড়া মাত্রই চোখের সামনে সঙ্গে সঙ্গে এসে কিছু জুতোজোড়া দেখতে
পেলো।আর কিছু মনে নেই ওর।যখন জ্ঞান ফিরলো তখন একটা ফার্মেসির মধ্যে একজন
মহিলার কাঁধে মাথা দিয়ে শুয়েছিল ও।আধখোলা আবছা চোখে মনেহলো একটা মুখ যেনো
বেশ কৌতুহল ভাবে ঝুঁকে আছে ওর দিকে,,,তৎক্ষণাৎ ই হুশ আসতে বুঝতে
পারলো,অ্যাকসিডেন্ট করেছে।
ওহহ…..ফ্।আপনি ঠিক আছেন?!আপনি তো ভয় ই পাইয়ে দিয়েছিলেন।আপনি এমন ভাবে
হঠাৎ করে আমার গাড়ির সামনে চলে এসেছিলেন,,,,,যে ব্রেক মারতে
মারতে…………কথাটা একটানা বলতে বলতে হাফিয়ে গিয়ে আর পুরো কথাটা শেষ
করতে পারলো না ছেলেটা।এমন ভাবে বলছে যেনো স্নেহার কিছু একটা হয়ে গেলে ছেলেটা
নিজেই মরে যেত।
আশেপাশে বেশ অনেক লোকজনই ভিড় করে আছে স্নেহার চারিদিকটা।পেছন থেকে অনেক্ষন
ধরেই একটা লোক সমানে জিজ্ঞাসা করে যাচ্ছে মা ঠিক আছো তো?স্নেহার এতক্ষন পরে
খেয়াল হতে উঠে বসে পিছন দিকে ঘুরতে গিয়ে ধাক্কা খেল কারোর একটা মাথার
সঙ্গে,বুঝলো যার কাঁধে এতক্ষন ও মাথা দিয়ে শুয়ে ছিল,ওই মহিলারই।
একটু সামলে নিল এবার ও নিজেকে।সঙ্গে সঙ্গে আবার একই প্রশ্ন কানে এলো ওর। তবে
এবার আর পিছন না ফিরে প্রথমে মাথাটা বেশ জোরে নাড়িয়ে ই উত্তর দিল ও।তারপর
বললো.. হ্যাঁ,ঠিক আছি আমি।ওনার কোনো দোষ নেই।আমিই অন্যমনস্ক হয়ে
হাঁটছিলাম।খেয়াল করি নি।আমারই ভুল।
কথাটা বলতে না বলতেই নিমেষের মধ্যে জায়গাটা বেশ খানিকটা ফাঁকা হোয়ে
গেলো।বুঝতে আর বাকি রইলো না, যেই ছেলেটার গাড়ির সাথে স্নেহা অ্যাকসিডেন্ট
করেছে সেই ছেলেটাকে কেলাবে বলেই হয়ত ও ওরা জড়ো হয়ে ছিল।শুধু স্নেহার হ্যাঁ
বলার অপেক্ষায় ছিল।কিন্তু ওর না বলায় খুশি বই দুঃখই বেশি পেয়েছে বোধয়
ওরা।

এবার নিজের দিকে খেয়াল করলো স্নেহা।জামাটা উপর দিকে বেশ খানিকটা ভিজে
আছে।বোধয় জ্ঞান ফেরানোর জন্য চোখেমুখে জল দিতে গিয়ে ভিজে গেছে।মাথাটা তখনও
হালকা হালকা ঘুরোচ্ছে।পাটা অসহ্য যন্ত্রণা করছে।যেনো কেটে বাদ দিয়ে দিতে
পারলে বাঁচে।ওই পায়েই লেগেছে আবার।আর ডানহাতে কনুই এর কাছেও একটু
জ্বলছে,বোধয় ছিলে গেছে।ওখানেই ওরা টুকটাক পায়ে স্প্রে ট্রে দিয়ে ব্যান্ডেজ
করেদিল।
আপনার ফোন আর এই যে আপনার ব্যাগ টা,!বলে সামনে স্নেহার দিকে এগিয়ে দিল
ছেলেটা।এতক্ষন পর এবার স্নেহা ছেলেটার দিকে ভালো করে দেখলো।স্নেহার চোখে চোখ
পরতেই আবার সরি বললো ছেলেটা। স্নেহার কিছু বলার আগেই নিজেই আবার বলে উঠলো
আপনার বাড়ি কোথায় বলুন,আমি আপনাকে বাড়ি ছেড়ে দিচ্ছি।
না না,ঠিক আছে।আমি চলে যেতে পারবো।কোনো অসুবিধে হবে না।ঠিক আছে।বলতে বলতেই
উঠে দাঁড়াতে গিয়ে প্রথমটা একটু টলে গেলো স্নেহা।

আরো পড়ুন, 
ছেলেটা ধরতে গিয়েও ওকে ধরলো না আর।সামলে নিয়েছে স্নেহা নিজেকে।
ছেলেটা এবার খানিকটা জোর করেই বললো,,আর ইউ সিওর?!না মানে।আপনি তো ঠিক করে
দাঁড়াতেই পারছেন না।চলুন না,সেরম হলে আমি ড্রপ করে দিচ্ছি।আর এখন অনেকট রাত
ও হয়ে গেছে। আপনাকে বাড়ি ছেড়ে দিলে আমার নিজেরও ভালো লাগবে। প্লিজ।
স্নেহার এবার বড্ড অসহ্য লাগছে। মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে।বিরক্ত লাগছে।কথাই বলতে
ইচ্ছে করছে না এখন ওর কারোর সাথে।একে তো মনমেজাজ ভালো নেই, তারওপর আবার এই
এক্সট্রা একটা শুকনো ঝামেলা।তাও ও আবার ভদ্র ভাবেই বললো,না ঠিক আছে।আমি যেতে
পারবো।আমার কোনো অসুবিধে হচ্ছে না।তবে যদি হেল্প করতেই হয় তাহলে একটা ক্যাব
বুক করে দেবেন?আসলে আমার ফোন………!
হ্যাঁ, হ্যাঁ নিশ্চই।আপনি বলুন,কোন অ্যাড্রেস।আমি এক্ষুনি করে দিচ্ছি।আপনি
যখন আপনার সাথে যেতেই চাইছেন না,ঠিক আছে।আর জোর করবো না।তার থেকে বরঞ্চ এই
ভালো।কথাটা শেষ হওয়ার আগেই বলে উঠলো ছেলেটা।
প্রায় পনেরো মিনিট হয়ে গেল ক্যাব বুক করা হয়েছে।কিন্তু এখনও অব্দি ক্যাবের
টিকিটিও দেখতে পাওয়া যায় নি।স্নেহার সাথে সাথে ওই ছেলেটা ও ওর থেকে একটু
দূরে এখনও অব্দি ঠাই দাঁড়িয়ে আছে।স্নেহা দুবার বললোও যে আপনি বেকার
দাঁড়িয়ে আছেন কেনো!ক্যাব এলেই আমি চলে যাব,আপনি চলে যান।
কিন্তু ছেলেটা বড্ড নাছোড় বান্দা,,,যতক্ষণ না স্নেহা ক্যাবে উঠবে আর উনি তা
নিজের চোখে দেখবেন,ততক্ষণ উনি ঠায় ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকবেন।তো থাকুক!আর ভালো
লাগছে না ওর!কোথায় কি বলতে গিয়ে কি বলে ফেলবে,তাই ওও আর কোনো কথা না
বাড়িয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে।



Valobashar Golpo


                   
                  ৩

ঘড়িতে তখন রাত সাড়ে নটা।কোনরকমে ওই অবস্থাতে পা নিয়ে মেসে ফিরলো স্নেহা।পা
আরো ফুলে গেছে।করি আঙ্গুলএর সাথে সাথে পাসে খানিকটা জায়গাও কালসিটে পরে
গেছে।বুঝলো রক্ত জমে গেছে।গোড়ালীর কাছটা আর ওই একই জায়গায় করি আঙ্গুলের
কাছটা তেই লেগেছে। বরফ নিতে হলে এখন ওপরে আন্টির কাছে যেতে হবে।আর এখন সিড়ি
বেয়ে উপরে ওঠার মতো না স্নেহার মানসিক ইচ্ছে আছে আর না শারীরিক ক্ষমতা।মেসেও
আজ সেরম কেউ নেই যে কাউকে বলবে এনে দিতে।সবাই পুজোর ছুটিতে বাড়ি চলে
গেছে।শুধু ওই পাশের রুমে অহনা,, ওও এখন রুমে নেই।বয়েফ্রন্ড এর সাথে
বেরিয়েছে।শুধু পড়ে আছে এখন ও।যদিও ও চলে যেত আজ।ভেবেছিল আদির সাথে দেখা করে
বেহালা পিসিমনির বাড়ি চলে যাবে। আসলে  পিসিমনি অনেকদিন ধরেই দুই ভাই
বোনকে একসাথে দেখেনি বলে বলছিল।
আর সত্যিকথা বলতে একই শহরে থেকেও প্রায় দুবছরের বেশি যাওয়া হয় না পিশিমনির
বাড়ি।তাই অভিযোগ এর সাথে অভিমান থাকাটাও স্বাভাবিক।তাই বাবাই ফোন করে বলেছিল
বাড়ি আসার সময় দুজনে একবার পিসির বাড়ি একরাত থেকে আসিস।আর দাদাও পুজোর
ছুটিতে  আসছিল আজ।তাই সোজা বেঙ্গলোর থেকে ওখানেই চলে গেছে।আর কথামত তাই
ওরও ওখানেই যাবার কথা ছিল।দিয়ে পরের দিন এক রাত থেকে দুই ভাইবোন মিলে একসাথে
বাড়ি ফিরতো।ওরমই প্ল্যান হয়েছিল।আর প্ল্যানের মধ্যে আদির সাথে দেখা করার কথা
টাও অনেকদিন আগে থেকেই ছিলো।আর তাই স্নেহাও যাতে দেখা করতে গিয়ে সব বইতে না
হয় তাই ব্যাগ ট্যাগ প্যাক করে আগেই দিয়েও এসেছিল পিসিমনীর কাছে।

আন্টি?আন্টিই…. ও………..আন্টি?,,
হ্যাঁ রে……এ বাবা যাইই…….!
সিড়ির নিচতলায় এক পায়ে কোনরকমে ভর দিয়ে দাঁড়িয়েই সমানে চিৎকার 
করার  পর আন্টি সারা দিল।রাত তখন পনে একটা হব হব। আন্টি প্রায় দৌড়ে
এসে ভুত দেখার মত করে বলে,
কি রে? কি হলো? রাত দুপুরে এরম ভাবে চিল্লাচ্ছিস্ কেনো?! সব ঠিক আছে তো?!…
আরো কতগুলো কথা একসাথে বলতে যাচ্ছিল আন্টি।কোনরকমে স্নেহা মাঝপথে থামিয়ে
দিয়ে বললো হ্যাঁ গো।সব ঠিক আছে।শুধু ওই একটু বরফ…. আর বলতে দিল না আন্টি
ওকে।প্রথমেই শুধু বরফের কারণে অভাবে রাত দুপুরে চিল্লানর কারণে ঝার খেল।দিয়ে
তারপর কারণ কি! জিজ্ঞাসা করতে,,, পায়ের কথা বলায় আবার ঝার খেল। হ্যাঁ। ঠিক
এই কারণেই তখন আন্টিকে বলে নি।আর সেই এখন। এমনিতে বরাবরই মেয়টা চাপা
স্বভাব  এর,ভেবেছিল হয়তো  সেরম কিছু না।নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যাবে।
কিন্তু কি আর করবে।আর এই যন্ত্রণা সহ্য করতে পারছে না ও।ব্যাথা বাড়তে বাড়তে
যেনো এবার পুরো শরীর এ ছড়িয়ে পড়েছে। তাই বলতেই হলো বাধ্য হয়ে।তখন তো
যাইহোক করে এসে শুধু রাগে শুয়ে পরে ছিল।তো কি রাগ করবে না!
ওখান থেকে ঐভাবে বেরিয়ে আসার পর থেকে একবারও ফোন করেনি আদি ওকে।ভর সন্ধেবেলা
অভাবে সবার সামনে স্নেহাকে কথা শোনালেন মহারাজ,আরেকটু হলে তো চোখ দিয়ে জল ও
গড়িয়ে পড়ত।শুধু বাইরে সবার সামনে বলে।নাহলে হইতো অন্য কোথাও হলে কেঁদে –
কেটে একাকারি করে দিত ততক্ষনে।ও কি খুব বড়ো ভুল কথা কিছু বলেছিল ওকে! শুধু
তো ওরই মায়ের কথা বলছিল ও। চাইছিল যাতে এত বছরের সমস্ত রাগ টাগ ভুলে নতুন
করে সব কিছু শুরু হোক। এত জোরে চিল্লিয়ে বলার কি দরকার ছিল!! আচ্ছা ওই সব নয়
ছেড়েই দিল এখন।ও তো আদিকে বলেছিল যে ওখান থেকেই ও সোজা পিসিমনী র বাড়ি
যাবে। ইনফ্যাকট সেটা শুনে আদি নিজে ওকে ছেড়ে দিয়ে আসবেও বলেছিল। তাও অভাবে
চলে আসার পরেও এখনো অব্দি ফোন করে জানার প্রয়োজন মনে করেনি যে মেয়েটা বাড়ি
পৌঁছেছে কি না। স্নেহা ও আর ফোন করেনি নিজে থেকে।কেনোই বা করবে। প্রত্যেকবার
ওই কেনো রাগ ভাঙ্গানোর জন্য মরে যাবে! কিসের দায় ওর। কথাটা ভাবতে ভাবতে
ফোনটা হাতে নিয়েও পাশে রেখে বালিশের মধ্যে মুখ গুঁজে নিল ও।
ব্যাস।আর এই অভিমান যাবে কোথায়।এসে করে আন্টিকেও জানায়নি যে ও যায়নি 
আজ।নেহাত অহনা রুমে স্নেহা আছে বলে জানতোনা তাই দরজা খোলার জন্য আন্টিকে ফোন
করে ডাকাতে দরজা খুলতে এসে দেখে স্নেহা বিছানার ওপর চিত হয়ে শুয়ে পড়ে
আছে।………………
                   
               

(চলবে…..✍️)

জানি দেখা হবে – দ্বিতীয় পর্ব

Share This Article