অঙ্কটা মিলে গেলো – Bangla Romantic Premer Golpo

Bongconnection Original Published
4 Min Read
অঙ্কটা মিলে গেলো - বাংলা গল্প | Bengali Story
Loading...

   

কলেজ থেকে লাষ্ট ক্লাশটা  কেটে বেরিয়ে এল রায়া। অথচ ম্যাথসের পি কে সির কলাস ছিল।
কিন্তু কি করা যাবে  প্রেমের টান। কলেজ থেকে
একটু এগিয়ে একটা রেষ্টুরেণ্টে  যেতে বলেছে
রূপম।
রায়াদের বাড়ী বাবা মা দুজনেই গোঁড়া। মা পইপই
করে বলে দিয়েছে—আমরা দেখেশুনে বিয়ে দেব।
প্রেম করিস না। রায়া ভেবেছিল তাই হবে।
কিন্তু তা বললে কি আর হয়! প্রেমের ফাঁদ পাতা
ভুবনে।
দুজনের দেখা হতে বেশ কিছুক্ষণ কথা হল।
রূপম বলল—পড়াটা ঠিকমত চালিয়ে কমপ্লিট কর। তবে এদিকে হয়েছে এক বিপদ। মা বলছে
চাকরী পেয়ে গেছিস।বাড়ীতে আমি একা।
এবার বিয়ে কর। কি জ্বালা বল। প্রেম করে বিয়ে
করব শুনলেই তো খেপে যাবে।
রায়ার মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে যায়। পর ক্ষণেই বলে
—করনা,কে বারণ করেছে।
আমাকেও তো মা বলছে ফাইনাল এক্সাম হয়ে
গেলেই পাত্র খুঁজবে।


রূপম বল—তবে আর কি। তুমিও  বিয়েয় বসে যাও।
এবার দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে হেসে ফেলে।
ওদের আলাপ হয়েছে মাত্র ছমাস। কিন্তু এর মধ্যেই
দুজনের প্রেম গভীর দানা বেঁধেছে।তবে রায়ার
বাড়ী খুব কড়া বলে দুজনের কমই দেখা হয়।
রূপমের মাও চায়  সম্বন্ধ করে বিয়ে দিতে।
রূপম বলল—ঘাবড়াও মত। আমাদের কেউ আলাদা করে দিতে পারবে না।
এইভাবে চলতে চলতে রায়ার পরীক্ষা চলাকালীন এক পাত্রের খবর এল।
বাবা মা সুচাকুরে দাবিহীন পাত্রের খবর পেয়ে
পরীক্ষার পরই মেয়ে দেখানোর দিন ঠিক করল।
রায়ার তো মাথায় হাত! সে রূপমকে সব জানালে
রূপম বলল–তুমি আমার ওপর সব ছেড়ে দাও।ওরা দেখতে এলে বস। তারপর আমি দেখছি।
রায়ার মা মেয়েকে পাত্রের ফটো দেখালে সে বলল,
—-রেখে যাও,পরে দেখব।
নির্দিষ্ট দিনে পাত্র আসবে। রায়ার বাবা মা বাড়ীতে
সাজ সাজ রব তুলেছে। ঘর সাজানো,খাওয়ার ব্যবস্থা সব হয়েছে। মাসীমণি এসেছে। রায়া বেশ সুশ্রী। কিন্তু এখন বিমর্ষ,একটু অগোছালো বেশ।
মাসী বলল,—বুঝছ না,সবাইকে ছেড়ে চলে যেতে
হবে।তাই মন খারাপ।
বিকেল পাঁচটা নাগাদ পাত্রপক্ষ এল। বাবা মা ও
ছেলে।
ওদের বসিয়ে মা মেয়েকে আনতে গেলেন।
রানী কালারের তাঁতের শাড়ী,গলায় চেন,কানে
ঝুমকো,রায়াকে বেশ সুন্দর দেখাচ্ছিল।
মা ভাবলেন,এক বারেই আমার মেয়েটাকে পছন্দ হয়ে যাবে। ভারী লক্ষীমন্ত।
মেয়েকে নিয়ে ঘরে এল মা।
পাত্রের মা বলল– এস মা বস।
রায়া বসল।তার বিভ্রান্ত লাগছিল। তবে কি রূপমকে ভুলতে হবে! না,তা হতে পারেনা।
সেরকম হলে সে প্রাণ দিয়ে দেবে,তবুও——
পাত্রের মা ছেলেকে বললেন—দেখ বাবা,ভাল
করে দেখেনে।
ছেলে একটু উদাস,অন্যদিকে তাকিয়েছিল।
এবার বাধ্য হয়ে মেয়ের দিকে তাকিয়েই থ!
একি!এ যে রায়া! তবে কি ভাগ্য এভাবে ফেভারে
এসে গেল।
মা বাবার সঙ্গে কোন বিবাদ না করেই সে রায়াকে
পেয়ে গেল।
রায়াও নির্বাক।
ভাবছে–ভগবান কি এত সহজে রূপমকে মিলিয়ে
দিলেন।
রুপম বলল,তোমাদের মতই আমার মত।
এবারে রায়া ও রুপমের মুখে এক মৃদু মিষ্টি হাসি
ফুটে উঠল।
কিন্তু দুজনে কেউই আসল কথা জানাল না।
ভগবান যখন ওদের এক করতে চান,তখন আর কে আটকাবে।
এরপর শুভদিন দেখে বিয়ে হয়ে গেলফুলশয্যার রাতে রায়া রূপমকে বলল,যদি আমি পাত্রী না
হতাম তবে কি করতে?রূপম বলল—যদি আমি পাত্র না হতাম তবে কি করতে?
এবার দুজনেই হেসে দিল।
রূপম বলল,—আর কি হত!দুজনেই ভবঘুরে হয়ে যেতাম।
রায়া পরম সুখে রূপমের মুখে মাথা রাখল।
চারিদিক ভালবাসার আলোয় ভরে গেল।
রূপমও জানত নাযে পাত্রী রায়াই হবে।
সে ভেবে রেখেছিল দেখে এসে বাড়ীতে সব বলে দেবে দরকার হলে বাড়ীর অমতে বিয়ে করে নেবে
রায়াকে।
কিন্তু তা না হয়ে মধুসমাপ্তি হল।

 থার্ড পার্সন সিঙ্গুলার নাম্বার | বাংলা গল্প 

ভোরের আলো | বাংলা গল্প




Share This Article