নীল আকাশের চাঁদনী – ভ্যালেন্টাইনস ডে স্পেশাল গল্প | Bengali Love Story – Nil Akasher Chadni ( Valentine’s Day special )

Bongconnection Original Published
3 Min Read


নীল আকাশের চাঁদনী – ভ্যালেন্টাইনস ডে স্পেশাল গল্প | Bengali Love Story – Nil Akasher Chadni ( Valentine’s Day special )

ভালোবাসা দিবসের বিশেষ গল্প - নীল আকাশের চাঁদনী |Valentine's Day special Bengali Story -Nil Akasher chadni
Loading...

Nil Akasher Chadni

Loading...

                      লিখেছেন – পুষ্পিতা ভৌমিক

না যতই সবাই বলুক আদিখ্যেতা সপ্তাহ বা ন্যাকামি সপ্তাহ এই সময় বেশ ভালোই বিক্রিবাটা হল মল্লিকবাজার ঘাটের ফুলওয়ালি চাঁদনির। বিয়ের মাস তিন পর ওর স্বামী সুনীল ওরফে নীলুর চটকলে কাজ যাবার পর থেকে চাঁদনি এই পেশায় এসেছে।এখনও এক বছর হয়নি বিয়ের তার আগেই সংসারের হাল ধরতে হয়েছে ওকে।তবে এবার সুযোগ বুঝে উপরি কিছু রোজগারের আশায় সকালে ঘাটে ফুল বিক্রি সেরে বিকেলে  গিয়ে বসেছে ও প্রিন্সেপ ঘাটে।বেশ ভালোই লাগে  যখন চাঁদনির থেকে কেউ গোলাপ কিনে পরিয়ে দেয় প্রেমিকার এলো চুলে বা খোঁপায়।শেষ বিকেলের আলোয় চিকচিক করে ওঠে প্রেমিকযুগলের মুখ।


ওর আর নীলুরও প্রেম ভালোবাসা করেই বিয়ে। আগে চেতলার দিকে এক বস্তিতে ভাড়া থাকত ওরা বিয়ের পর কসবার দিকে উঠে গেছে।শুধু অভাবের চোটে এখন ভালোবাসা খুঁজে পাওয়া দায় কোনোমতে দিন গুজরান হলেই ভালো।সে যাই হোক দিনের শেষে বাড়ি ফিরে চাঁদনি দেখে নীলু আজও ফেরেনি।এদিকে খিদেও পেয়েছে খুব জোর।যতই হোক মানুষটাকে ছেড়ে খাবে আজকের দিনে তার থেকে বরং থাক রাত্রে বাড়ি ফিরলে একসাথে খাবে দুজনে এই ভেবে ঢকঢক করে খানিকটা জল গলায় ঢেলে শরীরটাকে এলিয়ে দেয় বিছানায়। এভাবে কতক্ষণ কেটেছে জানেনা ও,হটাৎ শরীরে ও অনুভব করে একটা উষ্ণ স্পর্শ।

ঘুমের ঘোরে প্রথমে চমকে উঠলেও তারপর চাঁদনি অনুভব করে এত নীলু ওর স্বামী!মিষ্টি হেসে বলে,”দেখ কি এনেছি তোর জন্য।” উঠে বসে ও দেখে হাতে একটা প্যাকেটের ভিতরে জংলা শাড়ি আর শুকনো একটা গোলাপ। নীলু আস্তে আস্তে ওকে কাছে টেনে নিতে নিতে বলে,”তুই আজ সকালে বেরোনোর সময় চুপিচুপি সরিয়ে রেখেছিলাম ফুলের ডালা থেকে,শুকিয়ে যাবে বুঝতে পারিনি।আর ভাবলাম আজ সারাদিন বেশি করে রিকশা টেনে একটা শাড়ি কিনব তোর জন্য।রাগ করিস না রে।পরের বার তাজা গোলাপ আনব এই কথা দিচ্ছি।” খিলখিল করে হেসে ওঠে চাঁদনি। নীলুর বাহুডোর থেকে নিজেকে মুক্ত করে এবার বলে,”মরণ প্রেম যেন উপচে পড়ছে!চল খাবি চল!পেটে আগুন জ্বলছে।তুই ফিরিস নি বলে খেতে ইচ্ছা হলনা আমার।”


বস্তির কম পাওয়ারের বালবের আলোয় ঠাণ্ডা শুকনো আলু ভাত,কাঁচালঙ্কা জমে ওঠে ওদের প্রেম সেখানে কোথায় লাগে পাঁচতারা হোটেলের সুইমিং পুলের ধারে বসে বাতি জ্বালিয়ে রাতের খাওয়া। খাওয়া শেষে চাঁদনির খোঁপায় নীলু পরিয়ে দেয় শুকনো গোলাপ।কে বলে শুকনো ফুলে প্রেম নিবেদন করা যায় না?গরীব বড়োলোক নয় যে সম্পর্কে ভালোবাসা লুকিয়ে থাকে সেখানে শুধু প্রেমদিবস উদযাপন করার বাড়াবাড়ি না থাক ভালোবাসার ইচ্ছেটা কোথাও না কোথাও ঠিক লুকিয়ে থাকে সারাজীবনের জন্য।আর সময় হলেই সেটা টুপটাপ ঝরে পড়ে। হোকনা গরীবিয়ানা তাতে ক্ষতি কি? চাঁদনি আলোয় জমে ওঠে টক,ঝাল,মিষ্টিতে ভরা ওদের দাম্পত্য।।।

Share This Article