ঠগস অব হিন্দুস্থান – কেমন হলো ছবিটি ? জানতে দেখুন এক্সপার্ট রিভিউ

Bongconnection Original Published
5 Min Read
IMG 20181108 162243
Loading...
ছবির পোস্টার

















চারিদিকে আলোর রোশনাই আর দিওয়ালি র মিষ্টি মুখের আনন্দ । আর সেই আনন্দকেই অনেকাংশে বাড়িয়ে তুলতে রিলিজ হলো বছরের সবচেয়ে মাচ ওয়েটেড বলিউড ছবি ” ঠাগস অব হিন্দুস্থান ” । 
      
          অভিনয় – আমির খান , অমিতাভ বচ্চন ,                
         জায়রা বসির , ক্যাটরিনা কাইফ ।
                           6/10

১৭৫৫ র ঘটনা, যখন ভারতে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন চলতো । কিন্তু একজন এমন মানুষ ছিলেন যার এই ভিনদেশি সাদা চামড়ার মানুষদের শাসন বা গোলামি ছিল না পসন্দ । 
আর মানুষটির নাম খুদাম্মক আজাদ ।  যিনি নিজেই একটা সেনা তৈরি করে ইংরেজদের থেকে লুঠপাট করে ।
আর এই চরিত্রটি ই পর্দায় বাস্তবায়িত করেছেন অমিতাভ বচ্চন ।
বয়সটা যে আসলে কোন ফ্যাক্টর নয় সেটা উনি আবারও প্রমান করলেন তার নিখুঁত অভিনয়ের  মাধ্যমে । যেভাবে সাবলীল ভঙ্গিমায় আজাদ চরিত্রটি উনি পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন , তা দেখে সত্যিই বোঝা যায় কেন উনি বিগ বি ..! 
আজাদের লুঠপাঠের অত্যাচারে ইংরেজরা শেষ পর্যন্ত সাহায্য নেয় ফিরাঙ্গি মাল্লাহ র  , যে নিজেই আবার একজন বড় ঠগ । আর এই চরিত্রটিতেই অভিনয় করেছেন মিস্টার পারফেকশনিস্ট , আমির খান ।

যশরাজ ব্যানারের ছবি , আমির অমিতাভের মতো সুপারস্টার , দিওয়ালি র মরশুম – সব মিলিয়ে কার্যত পিচ তৈরিই ছিল , শুধু বাকি ছিল ওভার বাউন্ডারিটা হাঁকানোর । একরাশ উত্তেজনার পারদ আর উন্মাদনা নিয়ে রিলিজ হয়েছে ছবিটি ।
বিজয় কৃষ্ণ আচারিয়া পরিচালিত এই ছবিটি মুক্তি র প্রথম দিনই ৫০ কোটি টাকার ব্যাবসা করবে , এরকমই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন অনেক সিনেমা বিশেষজ্ঞই ।
পৌনে তিন ঘণ্টার এই ছবিতে অনেকের উপস্থিতি থাকলেও এই গল্প আসলে দুই চরিত্র আজাদ আর ফিরঙ্গির অস্তিত্বের লড়াই । 
ব্রিটিশ আমলের প্রেক্ষাপটে নির্মিত এই ছবি । ক্লাইভ লয়েড রাজা মির্জার ( রনিত রায় ) সাম্রাজ্য দখল করেন । আর তাতেই প্রতিশোধের আগুনে জ্বলতে থাকে রাজকুমারী জাফিরা ( ফাতিমা সানা ) । ঘকটনক্রমে ফাতিমার সঙ্গে হাত মেলায় ‘ঠগী’ আজাদ । এইভাবেই এগিয়ে চলতে থাকে গল্প । ইংরেজরা নিজেদের যুদ্ধে পরিবর্তন আনেন , সাহায্য নেন লড়াকু ফিরঙ্গির র ( আমির খান ) । 
এই ফিরঙ্গি চরিত্রকে ঘিরেই আবর্তিত হয়  পরবর্তী গল্প ।

images%2B%252819%2529


 ‘পাইরেটসের ‘সঙ্গে তুলনা 

    অনেকেই এই ছবির ট্রেলার বা পোস্টার দেখে একে হলিউড ছবি “পাইরেটস অফ ক্যারিবিয়ান ‘ এর সঙ্গে তুলনা করেছিলেন । আসলে যারা শুধু সমুদ্র , জল , জাহাজ আর কস্টিউম দেখে “পাইরেটস ” এর সঙ্গে তুলনা করেছেন , তাদের বলবো ভুল ভাঙতে একবার অবশ্যই সিনামেটি হলে গিয়ে দেখুন । 

এবারে আসি পারফরম্যান্স এর কথায় :

 অমিতাভ বচ্চন বা আমির খান তাদের এই বয়সেও যেভাবে নিজেদের মেলে ধরেছেন তা এক কথায় অনবদ্য । 
 আর এই ছবিতেই নতুন ভাবে পাওনা হলো ক্যাটরিনা কাইফ । অনেকেই তার অভিনয়ের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন । তাদের জন্য বেশ সারপ্রাইজ রয়েছে । রনিত রায়ের চরিত্র টি দাগ কাটতে ব্যার্থ  ।  
সংগীত পরিচালক অজয় – অতুল চেষ্টা করেছেন তাদের নিজেদের সেরাটা দেওয়ার । 
এই ছবির অন্য আরেকটি পাওনা হলো “দঙ্গল” গার্ল ফতিমা । অভিনয়ে নিজের দক্ষতায় নিজের চরিত্রটি বেশ ফুটিয়ে তুলেছেন ।

সবশেষে , অনেক উন্মাদনা নিয়ে ছবিটি মুক্তি পেলেও গল্প তেমন জমলো না । অভিনয় , ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক সবই ঠিক ছিল । শুধু কি যেন মিসিং । প্রথমত , ছবিটি পৌনে তিন ঘণ্টার জায়গায় চাইলেই আরো আধ ঘন্টা সময় কমিয়ে কিছুটা ছোট করতে পারতো । আসলে ছবিটির বেশ কিছু জায়গায় কিছুটা একঘেয়েমি ই লাগে দেখতে । গল্পটা আরও একটু জোরদার হওয়া প্রয়োজন ছিল । ক্লাইম্যাক্সের এক জায়গায় , বেহুঁশ অবস্থায় কিভাবে একজন সাঁতার কাটতে পারে সেটা যেমন পরিষ্কার নয় , তেমনি শেষ সিনে ইংরেজরা কিভাবে হটাৎ এত ভালো হয়ে গেলো সেটাও ঠিক বোঝা গেল না । 
সে যাইহোক , গল্প যেমনি হোক , সারা দেশের 
মানুষ এখন আলোর উৎসবে মাতোয়ারা । বাংলার বেশিরভাগ কালি পুজোর প্যান্ডেল হোক বা কোন ডিজে র ট্রাক রাত বাড়লেই বাজছে এই ছবির আইটেম নাম্বার ।
আসলে , গল্প যেমনি হোক ,বছরের শেষ প্রান্তে এসে আমির আর অমিতাভ বচ্চনের ফ্যানরা তাদের একসঙ্গে এক ফ্রেমে দেখতে পাচ্ছেন , এটাই বা কম কি !

আরও পড়ুন, অর্জুন – মালাইকার বিয়ে ????

Share This Article